শিরোনাম
।। মুহম্মদ আবদুল বাতেন ।।
ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, (বাসস) : ২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসের অমর স্তম্ভ। দেশ ও জনগণের এই বিজয়ের বছরটি এক নতুন অভিযাত্রা। গৌরবোজ্জ্বল এই বছরটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। বিশ্বের নৃশংস এক স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। ছাত্র-জনতার অদম্য লড়াই আর হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে দেশ হায়নার গ্রাস থেকে মুক্ত হয়েছে।
২০২৪ বাংলাদেশকে বিশ্বের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নবীন প্রজন্ম এক দানবের মুঠো থেকে দেশকে ছিনিয়ে এনেছে। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াই ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে সমকালীন বিশ্বের বিরল এক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ স্বৈরাচার ও আধিপত্যবাদী আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। জনতার এই অভ্যুত্থান গোটা বিশ্বকে অবাক করেছে।
এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশকে স্বাধীন, সার্বভৌম অস্তিত্ব নিয়ে অনাগতকাল টিকে থাকার প্রেরণা জোগাবে। অপশক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির এই দীক্ষা এদেশের জনগণের রক্তের মধ্যে সঞ্চালিত হয়েছে। যে কোনো বৈরীতার মোকাবিলায় এই শক্তির জাগরণ ঘটবে। নানা সম্প্রদায়, মত ও ধর্ম-বর্ণের সম্মিলিত শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ নতুন সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাবে।
২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট সেই ইতিহাসের সন্ধিক্ষণ, যা কখনো হারিয়ে যাবে না। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে যাবে, কিন্তু ২০২৪ শতাব্দীর পর শতাব্দীর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের গৌরবের স্মারক হয়ে থাকবে। সংখ্যা চিহ্নিত ২০২৪ সাল শেষ হবে না, আমরা কখনো ২০২৪-কে বিদায় জানাব না। এই বছরটি শেষহীন জুলাইয়ের মতো আমাদের স্মৃতি ও কর্মের মধ্যে উদ্ভাসিত হবে।
১৯৭১ সালের পরে ২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় একটি ঘটনাবহুল বছর। হত্য, জুলুম, অত্যাচার আর সীমাহীন লুন্ঠনে দেশ এক ভয়াবহ অন্ধকার গহ্বরে ঢুকে পড়েছিল। দেশ বেহাত হয়ে গিয়েছিল। ১৫ বছর ধরে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে সর্বস্তরের মানুষ গুম, হত্যা, নির্যাতন, লাখ লাখ মিথ্যা মামলা, বিনা বিচারে নৃশংস হত্যায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল।
২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের লড়াইয়ে নামে। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে ইতিহাসের পাতায় হাজারো শহিদ আর হাজার হাজার আহত ছাত্র-জনতার রক্তভেজা রাজপথে বিজয়ের পতাকা তুলে ধরে।
স্বৈরাচারের সশস্ত্র অনুগত বাহিনী ও দলীয় গুণ্ডা ও সন্ত্রাসীদের মোকাবিলায় নিরস্ত্র জনতার প্রতিরোধে পৃথিবীর নিকৃষ্ট, নৃশংস স্বৈরাচারের পতন ঘটে। গণহত্যাকারী স্বৈরাচার হাসিনা প্রাণ বাঁচাতে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।
স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের স্বৈরাচারী শাসন দেশকে চরম বিপর্যস্ত করে, হাজার হাজার মানুষ গুম ও হত্যার শিকার হয়। লাখ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেয়। লুন্ঠন করে দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করে। শেখ হাসিনা তার পিতার একই পথ অনুসরণ করে বিনাভোটে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে একটানা ১৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাখে। ২০২৪-এর ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতন ঘটে।
বছরের ঐতিহাসিক ঘটনা: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান
২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘটনাবহুল বছর। এই বছরটি ইতিহাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারের পতনের বছর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ১৫ বছরের স্বৈরাচার হটানোর এটি ছিল চূড়ান্ত পর্ব। ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ধাপে ধাপে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার উৎখাতের একদফার আন্দোলনে পরিণত হয়।
২০২৪ সালের ৫ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়। জুলাইয়ে মাঝামাঝি থেকে এই আন্দোলন তীব্র হতে থাকে। ১৬ জুলাই রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে শহিদ হওয়ার পর সরকারি বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ধারাবাহিক এই আন্দোলন ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে পরিণত হয়।
এই আন্দোলনে তৎকালীন শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার ভয়াবহ দমন নিপীড়ন শুরু করলে এটি অসহযোগ আন্দোলনে রূপ নেয়। এই গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পলায়ন করতে বাধ্য হন। বাংলাদেশ এ সময় সাংবিধানিক সংকটে পড়ে এবং এর তিন দিন পরে নোবেল বিজয়ী, বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদ।
বছরের শুরু থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা
হাসিনার তল্পিবাহক আদালতে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাজা: ২০২৪-এর শুরুতে ১ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সরকার নিয়ন্ত্রিত আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার তাবেদার নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ৭ জানুয়ারি দেশেবিরোধী দলবিহীন একতরফাভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচন ছিল দেশ ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা। ২০২৪-এর দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভুয়া নির্বাচন শেখ হাসিনার পতনের জন্য পটভূমি তৈরি করে। দেশের জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য গড়ে ওঠে।
পাঠ্যবই বিতর্ক
১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে আলোচনায় আসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়।
পরবর্তীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আসিফ মাহতাবকে। ওই সেমিনারে তিনি অভিযোগ করেন, ‘সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে।’ এ সময় তিনি সপ্তম শ্রেণির ওই বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের শরিফার গল্প অংশের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন।
২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটি গঠনের ১৩ দিনের মাথায় কমিটি বাতিল করা হয়। এরপর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা- সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে ওই কমিটি বাতিলের পর এনসিটিবি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাতিলের কোনো কারণ উল্লেখ বা ব্যাখ্যা করা হয়নি।
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড
এ বছরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের র ঘটনা ঘটে ২৯ ফেব্রুয়ারি। ঢাকা শহরের বেইলি রোডের গ্রিন কোজি নামক বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জন মৃত্যুবরণ করেন। ভবনটিতে একাধিক রেস্তোরাঁ ও দোকান ছিল, যার মধ্যে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ, স্যামসাংয়ের শো-রুম, গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ার, ইল্লিয়িন, খানা’স ও পিৎজা ইন উল্লেখযোগ্য। পুরো ভবনের প্রতিটি তলায় রেস্তোরা থাকায় ভবনে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ রাখা ছিল, যার ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়েছে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান
আবু সাঈদ ছিলেন ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন কর্মী। আবু সাঈদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসাবে এই আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রংপুর অঞ্চলে কোটা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এই আন্দোলনে ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহিদ হন। এর পরেই দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
২০২৪-এর ২০ জুলাই শেখ হাসিনা সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সারাদেশে কারফিউ জারি করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে ২২ জুলাই রাতে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
২৭ জুলাই এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ শুরু করে। সারাদেশে ৬ হাজারের বেশি গ্রেফতার করা হয়। ৫৫০ অধিক মামলা দায়ের করা হয়।
৩ আগস্ট সরকার পতনের একদফায় গোটা দেশ আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে। শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও বিভিন্ন বাহিনীর গুলিতে শতাধিক শহিদ হন, আহত আন্দোলনকারীর সংখ্যা কয়েক হাজার। আন্দোলন দমনে স্নাইপার রাইফেল ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমাবেশে পুলিশের হামলায় ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতার মৃত্যু এবং কয়েক হাজার আহত হয়। এদিন ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ নামে অবরোধের ঘোষণা করা হয়।
৫ আগস্ট লাখ লাখ মানুষ পুরো ঢাকার রাজপথে নেমে আসে। গণভবন অভিমুখে মিছিলে মিছিলে সব রাজপথ একাকার হয়ে যায়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
৭ আগস্ট খালেদা জিয়ার কারামুক্ত হন।
৮ আগস্ট সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ উপদেষ্টার মধ্যে ১৪ উপদেষ্টার শপথ গ্রহণ। পরে অপর তিন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেন।
১০ আগস্ট শনিবার রংপুরে শহিদ আবু সাঈদের বাড়িতে যান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.ইউনূস।
১০ আগস্ট নতুন বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ রেফাত আহমেদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ভাষণ প্রদান করেন।
আগস্টের মাঝামাঝি বন্যা মোকাবিলা
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই আগস্টের শেষ দিকে দেশের পূর্ব এবং উত্তর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার দুর্যোগ নেমে আসে। ফেনীসহ ১২ জেলাটি জেলা বন্যায় ডুবে যায়। বন্যায় বিপুল সম্পদের ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে। সরকার এই বন্যা মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নিয়েছে। ছাত্র আন্দোলনসহ সারাদেশের মানুষ বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ায়।
উজানে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে দেশের ১১টি জেলা ভয়াবহ বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। এর বাইরে বন্যাকবলিত হয়েছিল রাঙামাটি জেলা।
ড. ইউনূসের প্রতি ১৯৮ জন বিশ্বনেতার সমর্থন
বাংলাদেশের জনগণ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েয়েছেন ১৯৮ বিশ্বনেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ অন্তত ৯২ জন নোবেল বিজয়ী। ৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে ওই ১৯৮ বিশ্বনেতার স্বাক্ষরসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্বনেতারা বলেছেন, ‘আমরা নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যান্যদের মতো অধ্যাপক ইউনূসও স্বৈরাচারের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের বিদায়ের পর তিনি সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন।’
‘আমরা বছরের পর বছর ধরে অধ্যাপক ইউনূসকে সমর্থন দিতে পেরে গর্বিত। এটা বাংলাদেশে নতুন সূর্যোদয়ের সূচনা। আমরা সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের শান্তি এবং সাফল্য কামনা করছি।’
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় নাহিদ ইসলাম
টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম-১০০ নেক্সট’ ২০২৪ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। প্রতি বছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে বিখ্যাত এই সাময়িকী। গত ২ অক্টোবর এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে উদীয়মান নেতা ক্যাটাগরিতে নাম রয়েছে নাহিদ ইসলামের।
টাইম ম্যাগাজিনে নাহিদ ইসলাম সম্পর্কে বলা হয়েছে: ‘২৬ বছর না পেরুতেই বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। যেসব ছাত্রনেতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন সূচনা করেছিলেন, সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা নাহিদ ইসলাম তাদের অন্যতম।’
নেচার সাময়িকীতে সেরা দশ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের সেরা ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। নেচার তাকে ‘নেশন বিল্ডার’ আখ্যা দিয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর নেচারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে কীভাবে গবেষকেরা আমাদের পৃথিবীকে গড়ছেন, তার স্বীকৃতি এই তালিকা।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি লুটপাটের শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ
২১ আগস্ট সরকার শ্বেতপত্র তৈরিতে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। গত ১ ডিসেম্বর কমিটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্বেতপত্র জমা দিয়েছে। শ্বেতপত্রে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে ২৮ উপায়ে দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচারের তথ্য তুলে ধরেছে।