শিরোনাম
ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): সেবা প্রদানে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রেলভবনে একযোগে ৩টিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আজ ৫টি অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম আজ এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রয়ে সার্ভিস চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে বনানীতে অবস্থিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকম -এর প্রধান কার্যালয়ে রেলের টিকেট বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০২২ সালে রেলের সাথে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তার রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে টিম রেলভবনে যুগ্ম মহাপরিচালকের (অপারেশন) সাথে চুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলীর (টেলিকম) সাথে লোকোমোটিভে জিপিএস ট্রাক বসানোতে বিলম্বসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে কথা বলে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। প্রাথমিক যাচাইয়ে সার্বিক প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। রেকর্ডপত্র বিস্তারিত যাচাইপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
বেসরকারি খাতে ট্রেন ইজারা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) দুদক টিমকে জানান, বেসরকারি খাতে ট্রেন ইজারার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেল অঞ্চল, তথা পূর্বাঞ্চল/পশ্চিমাঞ্চল হতে টেন্ডার সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে কার্যাদেশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের ঠিকানা সরেজমিন পরিদর্শনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে একই মালিকের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইজারা পাওয়ার বিষয়ের প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক টিম। পূর্বাঞ্চল/পশ্চিমাঞ্চল থেকে টেন্ডার সংক্রান্ত সকল নথিপত্র যাচাইপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এছাড়া রেলখাতে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ ও পরিচালন ব্যয়ে নানাবিধ অনিয়মের ফলে বিগত ১৫ বছরে মোট ২১ হাজার কোটি টাকা লোকসান হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে রেল ভবনে অপর একটি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে টিম ৩০টি লোকোমোটিভ ক্রয়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের আবাসিক উন্নয়ন, রেলপথ নির্মাণ, ডেমু ট্রেন ক্রয় ও ব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত পরিচালনা ব্যয়, পূর্বাঞ্চলে রেলপথ ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত মূল্যে যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রভৃতি বিষয়ক ৭টি অভিযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করা হয়। প্রাথমিক যাচাইকালে অভিযোগসমূহের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
এদিকে হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুঘ দাবি করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের হবিগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিম হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে টিমের সদস্যরা পাসপোর্ট অফিসে আগত সেবাগ্রহীতারা কোন হয়রানির শিকার হয়েছেন কি না, কাউকে ঘুষ দিয়েছেন কি-না, এসব বিষয়ে সেবাগ্রহীতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিযানকালে প্রাপ্ত তথ্যাবলির আলোকে এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিশোরগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বিভিন্ন প্রকল্পের নথিপত্র সাপেক্ষে সরেজমিনে প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন এবং কৃষকদের সাথে কথা বলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসমূহের প্রশিক্ষণ, কৃষি উপকরণ বিতরণসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়।