শিরোনাম
লালমনিরহাট, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলায় গত ১০ দিনের ব্যবধানে আগাম জাতের আলু পাইকারিতে দাম কমেছে প্রতিমণে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। আর খুচরা বাজারে কেজিতে কমেছে ২০-৩০ টাকা। শীতের সবজির দাম কমায় ভোক্তারা স্বস্তিতে থাকলেও কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা।
তারা আকাশচুম্বী লাভ কখনোই চান না। উৎপাদন খরচ বাদে কিছু লাভ হলেই তারা খুশি। হঠাৎ করে যেভাবে শাক সবজি দাম কমতে শুরু করেছে তাতে শীতকালীন সবজি চাষ করে তাদের লোকসানে পড়তে হবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন তারা।
গত এক সপ্তাহ আগে, লালমনিরহাটে আগাম জাতের প্রতিমণ আলু বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর এখন বাজারে প্রতিমণ আলু বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০শ থেকে ১ হাজার ৬০০শ টাকা পর্যন্ত।
কৃষকরা বলছেন, এবার আলুসহ আগাম শীতকালীন সবজির বীজ ও অন্যান্য কীটনাশক সার তাদের ভালো দামে কিনতে হয়েছে। এভাবে দাম কমতে থাকলে তাদের লোকসানে পড়তে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন সবজির দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-৪০ টাকা। এতে করে নিম্ন আয়ের সাধারণ ক্রেতারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। অন্যদিকে কৃষকরা লোকসানের আশঙ্কায় ভুগছে।
১০ দিন আগেও যেসব সবজি কিনতে হয়েছে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে। এখন সেসব সবজি বিক্রি হচ্ছে ১৫-৪০ টাকায়। আজ মঙ্গলবার, সকালে লালমনিহাটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৪০-৪৫ টাকা। নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫- ৫০ টাকা, বেগুন ১৫-২০, টমেটো ৩৫-৪০, ফুলকপি আকার ভেদে ১০-১৫টাকা, শিম ২৫-৩০, গাজর ৩৫-৪০, মরিচ ৪০, মুলা ৬-১০, লাউ আকার ভেদে ২০-৩০, বাঁধাকপি ১০-১৫ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০টাকা, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা, শসা ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ৩৫-৪০ টাকা। তবে শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজারগুলোতে পাইকারি ও খুচরা দামের সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
কাঁচা বাজার করতে আসা ভোক্তা জাহিদ হাসান (৪০)ও আশরাফ আলী (৫২) বাসস কে' বলেন, গত ২ সপ্তাহের তুলনায় শাক-সবজির দাম অনেকটা কমেছে। এমন বাজার থাকলে সবার জন্যই ভালো। গত কয়েকদিন শাক সবজির দাম চড়া ছিলো কিন্তু এখন কাঁচা বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
সবজি বিক্রেতা হাবিবুর রহমান (৪০) বলেন, মূলত শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। আগে যারা ২-৩ বস্তা সবজি বাজারে আনতেন, তারাই এখন ৫-৮ বস্তা সবজি আনছেন বাজারে।
আরেক বিক্রিতা একরামুল হক (৪৮) বলেন, বাজারে শীতের সবজির আমদানি বেড়েছে। এ জন্যই দাম কমতে শুরু করেছে। আবার আমরা এখন কাঁচা সবজি পাইকারদের কাছ থেকে না নিয়ে, চেষ্টা করি কৃষকদের কাছ থেকেই পাইকারি দামে সবজি কিনে সামান্য লাভে খুচরা দরে বিক্রি করার। মূলত কিছুটা এ কারণেই খুচরা বাজারে সবজির আংশিক দাম কমেছে।
আড়ৎ এ সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক রহমান আলী (৪৫) বলেন, যেভাবে পেঁয়াজ আলুসহ সবজির দাম কমেছে। এভাবে যদি আরও দাম কমে তাহলে লোকসানে পড়তে হবে। তিনি বলেন, পেঁয়াজ বীজ কিনতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সেই সঙ্গে রাসায়নিক সারসহ দিন মজুরের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে । কষ্ট করে আবাদ করে একটু লাভ না হলে পরবর্তীতে কিভাবে চাষাবাদ করব।
বড়বাড়ী বাজারের আড়ৎ ইজারাদার মোসারব আলী,(৫৪) বাসস কে' বলেন; এখন সরবরাহ বাড়ায় সবজির বাজার হাতের নাগালে চলে এসেছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু এভাবে সবজির দাম কমতে থাকলে অন্যদিকে কৃষকেরা লোকসানে পড়বে।