শিরোনাম
বরগুনা, ১ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার আশারচর, টুলুরচর, মাঝেরচর ও লালদিয়ারচর অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে আছে।
নামের সঙ্গে চর শব্দটি যুক্ত থাকলেও মূলতঃ আশারচর ও লালদিয়ারচর;-এ দুটি সাগর পাড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চল। একদিকে সীমাহীন সাগরের মোহনীয় গর্জন, অন্যদিকে হরেক প্রজাতির বৃক্ষসমৃদ্ধ চিরসবুজ বনভূমি ঘিরে অগণিত নানা জাতের পাখিদের ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো। জলের ভেতর পাখিদের খুনসুটি, ডুব দেয়া, দলবেঁধে সাঁতার কাটা, বিরামহীন মাছ শিকারে বেলা কেটে যাচ্ছে। মনোরঞ্জন করে চলেছে বরগুনার এ পর্যটন স্পটগুলোতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের।
পাথরঘাটা উপজেলার লালদিয়ারচর ও তালতলী উপজেলার আশারচর এলাকায় আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ি, গিরি হাঁস, পিয়াং হাঁস, পাতি সড়ালি, রাজ সড়ালিসহ প্রভৃতি জাতের নানা আকার, রংয়ের পাখ-পাখালি। প্রতিবছরই শীতের শুরুতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব পাখিরা দলবেঁধে ছুটে আসে এ চরাঞ্চলে। পুরো শীত মৌসুমজুড়ে এখানে অবস্থান করে এক সময় আবারো পাড়ি জমায় ভিনদেশে।
দুই চরেই রয়েছে দুটি অভয়ারণ্য। পাথরঘাটার লালদিয়ারচরে বিশাল হরিণঘাটা বনভূমি। আশারচরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
বরগুনার লালদিয়ারচরে ঘুরতে আসা পর্যটক ফেরদৌসী আক্তার, মহিউদ্দিন খান, অপু, জাহিদ হাওলাদাররা জানিয়েছেন, “একই সঙ্গে সাগর ও বনের সৌন্দর্য দেখতে হলে বরগুনার হরিনঘাটা ও টেংরাগিরি বনের কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রতিবছর প্রকৃতির টানে শীতের মৌসুমে এখানে আসি। বন ও বৃক্ষের পাশাপাশি আমরা দূর দেশ থেকে আসা অতিথি পাখি দেখতে পাই যা আমাদের মুগ্ধ করে।”
স্থানীয় এক অধিবাসীরা জানান, শীতে এখানে যেমন অতিথি পাখিদের সাঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে তেমনি এক শ্রেণির চোরা পাখি শিকারীও আসে। বনবিভাগ কার্যালয় থেকে চরের দূরত্ব একটু বেশি হওয়ায় চোরা শিকারীরা ধরা পড়ছে না।
সুন্দরবন জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির স্থানীয় সভাপতি সোহেল হাফিজ ও বরগুনার সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি সোহেলী পারভিন ছবি বলেন, শিকারীদের হাত থেকে অতিথি পাখিদের বাঁচাতে হলে দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা পায়ে হাঁটা পথ (ওয়াকওয়ে) এবং সেই সঙ্গেএ চর দুটিতে আলাদাভাবে বনবিভাগের ক্যাম্প স্থাপন জরুরি। ইতোমধ্যে হরিণঘাটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বেশকিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। পাখি শিকারীদের মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়ে বরগুনা বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার মো. মতিউর রমান জানিয়েছেন, পাখি ও বন দেখতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। কেউ ঘুরতে এসে যদি পাখি শিকার করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।