শিরোনাম
॥ আল-আমিন শাহরিয়ার ॥
ভোলা, ১ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : দ্বীপ জেলা ভোলার সর্ব দক্ষিণের সাগর জনপদ চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত পর্যটন স্পট প্রশান্তি পার্কটি প্রকৃতির এক অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা লীলাভূমি। দেশের অন্যান্য পর্যটন নগরগুলোর পাশাপাশি ভোলার চরফ্যাশনও পিছিয়ে নেই।
এ উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন স্নিগ্ধ ও মনোরম পরিবেশ শোভিত বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক চরফ্যাশন উপজেলায় আগত পর্যটকদের জন্য প্রাকৃতিক রূপ-লাবণ্য উপভোগ করার অন্যতম স্থান।
মেঘনার শাখা বেতুয়া নদীর পাড়ে প্রকৃতির অপূর্ব মিতালী উপভোগ, নদী পাড়ে বসে সূর্যাস্ত অবলোকন ও নদীর নির্মল বাতাসে বসে সময় কাটানোর জন্য প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে ছুটে আসেন একটুখানি প্রশান্তির সন্ধানে।
প্রশান্তি পার্কের সু-বিশাল জায়গা জুড়ে সবুজ বেষ্টনীঘেরা শালবন আর কেওড়াবনের কঁচিপাতার সবুজ সমারোহ পুরো জনপদটিকে যেনো প্রকৃতিপ্রেমীদের মাঝে অন্যরকম এক মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে।
উপজেলার পূর্ব প্রান্তে মেঘনা নদীর শাখা বেতুয়া নদীর তীরে এ পার্কটির অবস্থান। বর্তমানে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের অন্যতম একটি কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কটি। পার্কটিতে উন্মুক্ত প্রবেশপথ থাকায় যে কেউ সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারেন। দর্শনার্থীদের পদচারণা মুখরিত থাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও এখানে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে প্রশান্তি পার্কটি।
সৌন্দর্যে ঘেরা চরফ্যাশন শহর খেকে ৬ কিলোমিটার দূরে গেলেই দেখা মিলবে প্রকৃতির এক মনোরম পরিবেশ বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক। ছুটির দিনে সবচেয়ে বেশী মানুষের সমাগম হয় এখানে। একটু বিনোদন পেতে ভ্রমণ পিপাসুদের ঢল নামে।
প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর অবসর সময় কাটাতে ছুটে যাচ্ছেন সেখানে। প্রতিদিন সেখানে অসংখ্য পর্যটকদের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে প্রশান্তি পার্কটি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে কেউ পরিবার-পরিজন কেউ বা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ছবি তুলছেন, স্পিডবোট বা নৌকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
দর্শনার্থীদের খাবারের জন্য এখানে রয়েছে বিভিন্ন ফাস্টফুড ও ভ্রাম্যমাণ দোকান। এসব দোকানে চটপটি, ঝালমুড়ি, চা-কফি মেলে হাতের নাগালে। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
জেলা সদর ভোলা থেকে প্রায় একশ' কিলোমিটার দূরুত্বে বাস, সিএনজি,মাইক্রো অথবা মোটর বাইকযোগে চরফ্যাশন উপজেলায় পৌছোতে হবে। সেখানে গিয়ে পৌরসভা সংলগ্ন যেকোনো স্থান থেকে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি অথবা ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে যাওয়া যায় প্রশান্তি পার্কে।
পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ওই পার্কে ঘুরতে আসা প্রকৃতিপ্রেমী মীর মোশাররফ অমি বলেন, প্রশান্তি পার্কটি অত্যন্ত সুন্দর ও মায়াঘেরা একটি পর্যটন স্পট। এখানে এসে ঘুরে প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি। খুলনা থেকে সেখানে আসা অপর পর্যটক গোলাম হোসেন বলেন, কুকরী-মুকরী ঘুরতে সুদূর খুলনা থেকে চরফ্যাশনে এসেছি। এখানে প্রশান্তি পার্কটিতে আগে এলাম। পুরো এলাকা ঘুরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
প্রশান্তি পার্ক নিয়ে কথা হয় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী মিজান নয়নের সাথে। তিনি বলেন, যদিও এ পার্কটিতে ঘুরতে কোনো খরচ কিংবা টিকিট কিনতে হয় না, তবুও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এটিকে আরো সৌন্দর্যমণ্ডিত করা গেলে এখান থেকে রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে। ভোলার জেলা প্রশাসক মোঃ আজাদ জাহান বাসস'কে বলেন, প্রশান্তি পার্কসহ ভোলার প্রতিটি পর্যটন স্পটগুলোকে আরো মনোরম করতে সরকারের মাষ্টার প্ল্যান রয়েছে, যা অচিরেই বাস্তবায়ন হবে।