বাসস
  ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৫

শেরপুরে ৩দিন ধরে দেখা নেই সূর্যের, বিপর্যস্ত জনজীবন

শেরপুর, ২ জানুয়ারী, ২০২৫ (বাসস): তীব্র শীতে কিছুটা হলেও আরাম দেয় সূর্যের আলো। কিন্তু গত ৩দিন ধরে ঘন কুয়াশার কারণে জেলায় দেখা নেই সূর্যের। সাথে আছে হাড় কাঁপানো হিমেল বাতাস। এ কারণে জেলার ৫ উপজেলায় অধিকাংশ এলাকায় কনকনে ঠাণ্ডা বিরাজ করছে। 
এ অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল খেটে খাওয়া মানুষকে। 

বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন শীতার্তরা। এদিকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। 

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে দুই শতাধিক মানুষ। এ ছাড়া ঘন কুয়াশায় ঢাকা ইরি-বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে,  আরো দু-তিন দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে।

সড়কে মানুষের চলাচল কম থাকায় আয় কমে বিপাকে পড়েছেন ভ্যান ও রিকশা চালকরা। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও শেরপুর-ঢাকা ও শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

দিনমজুর জাফর মিয়া (৩৩) জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা পড়েছে। কিন্তু গতকাল থেকে ঠান্ডার মাত্রাটা অনেকটা বেড়ে গেছে। রাতে বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ছে, সেই সাথে ঠান্ডা বাতাস বইছে। যার কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। আমরা তো দৈনিক শ্রমের ভিত্তিতে কাজ করি। এই শীতের কারণে কাজ করতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে জ্বরসর্দী কাশিসহ বিভিন্ন সমস্যা তো লেগেই আছে। 

অটোরিকশা চালক কাশেম মিয়া (৪২) বলেন, গতকাল থেকে যেমন কুয়াশার পরিমাণ বেড়েছে তেমনি শীতের মাত্রাও বেড়েছে। অটো চালাতে গিয়ে কুয়াশার কারণে কোনোকিছু ঠিকমত দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশা এমন পড়ছে যে ৫ হাত দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। যার কারণে অটো চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। সেই সাথে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে। দুই তিনটা গরম কাপড় পড়েও ঠান্ডা কাটছে না এমন অবস্থা। পেটের তাগিদে বাইরে বের হয়েছি, অটো চালাচ্ছি। কিন্তু সড়কে মানুষজন নেই যার কারণে আয় রোজগার আগের মত হচ্ছে না।

কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান (৪৬) গত ৩দিন থেকে সুর্যের দেখা মিলছে না। সারাদিন কুয়াশা ঝড়ছে যার কারণে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে। ঠান্ডার কারণে আমাদের খেত খামারে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষকরে তীব্র ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারনে সবজি ও ধানের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে।