বাসস
  ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৯
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৫

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম, ২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

আজ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’র নেতা অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১১ জন আইনজীবী দাঁড়িয়েছিলেন। তবে চিন্ময়কে আদালতে হাজির করা হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা জামিনের বিরোধিতা করেছি। আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন।

চিন্ময় দাসের প্রথম আইনজীবী শুভাশিস শর্মা আদালতে হামলা ও ভাঙচুর সংক্রান্ত ইতোপূর্বে দায়েরকৃত মামলার আসামি হয়ে বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন। চিন্ময় দাসের পক্ষে সম্প্রতি শুনানি করতে আসা সিনিয়র আইনজীবী রবিন্দ্র ঘোষ চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছেন ঢাকায়। আজ চিন্ময়ের পক্ষে ১১ জন আইনজীবী এসেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট থেকে। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের পক্ষে এই আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দেন ‘সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’র নেতা অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি জানিয়ে বলেছে, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। কেউ সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর পক্ষে জামিনের শুনানি করেছি। আদালতকে জানিয়েছি, জাতীয় পতাকার কোনো অবমাননা হয়নি। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো।

জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়। এ মামলায় ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন তাকে কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও মহানগর হাকিম আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।

চিন্ময় গ্রেফতার ও জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ওইদিন তার সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা পুলিশ ও আইনজীবীর ওপর হামলা চালায়। ওইদিন চিন্ময় সমর্থকরা সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে খুন করে।

পরে গত ৩ ডিসেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ফের জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও ওইদিন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। যে কারণে আদালত জামিন শুনানি পিছিয়ে ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আজ আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি ছিল। আদালতপাড়ায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্য মোতায়েন ছিল। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’