শিরোনাম
ঢাকা, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীর পল্লবীতে ছয় মাসের শিশু আমেনা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে এবং ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির পল্লবী থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শিশুটির মা ফাতেমা বেগম (২৫) ও মো. জাফর (৩৬)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, শুক্রবার গভীর রাতে পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৩টায় দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ১২৪ নং পিলার সংলগ্ন লেকপাড় হতে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। শিশুটির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ দেখতে পায় তার গলায় সন্দেহজনক আঘাতের দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলাটি তদন্তের একপর্যায়ে মৃত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় শিশুটির নাম আমেনা ও তার বয়স ৬ মাস। পরিচয় শনাক্তের পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৃত শিশুর মা ফাতেমা বেগমকে (২৫) সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে ফাতেমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয় মো. জাফর (৩৬) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির মা ফাতেমা বেগমের পরকীয়া প্রেমের কারণে শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই জাফরকে গ্রেফতার করে পল্লবী থানা পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেফতারকৃতরা দু’জনেই বিবাহিত এবং পল্লবী এলাকায় বসবাস করত। জাফর একটি গার্মেন্টসে কাজ করে। শিশুর মা ফাতেমা এর আগেও ওই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে জাফরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
তারা দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিলো। গত ৫ অক্টোবর রাত ৮টায় জাফর ফাতেমার বাসায় দেখা করতে আসে। এসময় ওই শিশুর কান্নাকাটির কারণে তারা বিরক্ত হয়ে শিশুটিকে প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ালে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে এবং পরবর্তী সময়ে বালিশ চাপা ও শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
পরবর্তীতে বিছানার চাদর দিয়ে শিশুটির লাশ মুড়িয়ে কাপড়ের একটি শপিং ব্যাগে ঢুকানো হয়। এরপর জাফর শপিং ব্যাগে করে লাশটি নিয়ে মেট্রোরেলের একটি পিলারের কাছে ফেলে আসে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ফাতেমা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এই শিশু হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে থানা সূত্রে জানা গেছে, মৃত শিশুটির পরিচয় উদঘাটনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচারণা চালানো হয় যার ফলে শিশুটির পরিচয় শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে তদন্তে মামলার এতথ্য উদঘাটিত হয়।
গ্রেফতারকৃত জাফর ছয়দিনের পুলিশ রিমান্ডে পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।