বাসস
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪১
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৪

ফুল মনের সংকীর্ণতা দূর করে : চট্টগ্রামে ফুল উৎসবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব

বক্তব্য দিচ্ছেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেছেন, ফুল আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফুল মনের জড়তা ও সংকীর্ণতা দূর করে মানুষের মনকে নির্মল আনন্দ দেয়।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত ফৌজদারহাট ডিসি পার্কে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত ফুল উৎসব-২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ফুল পবিত্র তাই সবাইকে ফুলের মতো জীবন গড়ে তুলতে হবে। আগামী প্রজন্মের মনে ফুলের মাধুর্যকে ফুটিয়ে তুলতে চট্টগ্রামের এই ‘ফুল উৎসব’ সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফিতা কেটে, বেলুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে মাসব্যাপী ‘চট্টগ্রাম ফুল উৎসব’এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। এরপর অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে ভাসমান ফুল বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের সমারোহ পরিদর্শন করেন তিনি।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. খোরশেদ আলম খান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা ও মো. নুরুল্লাহ নুরী।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, সুধীজন ও স্থানীয় শিল্পী, অসংখ্য দর্শণার্থীসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য, সঙ্গীত, দ্বৈত সঙ্গীত ও পাপেট শো পরিবেশিত হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকে ১৩৬ প্রজাতির প্রায় ১ লাখ ফুল দেখে আমার মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে। ফুল যেমন পবিত্র, ঠিক তেমনি আমাদের মনকেও পবিত্র করে তুলতে ফুলের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যারা দায়িত্বশীল আছি এবং ভবিষ্যতে যারা দায়িত্ব গ্রহণ করব, সবার জীবনকে ফুলের মতো পবিত্র করে গড়ে তুলতে হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, আপনারা সবাই জানেন ফুল পবিত্রতার প্রতীক। আমরা মানুষকে যখন আর্শীবাদ জানায় তখন বলি, তোমার জীবন ফুলের মতো সুন্দর হোক। আগে এ জায়গাটা মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। দখলদার ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ১৯৪ একর সরকারি জায়গাকে উদ্ধার করে ফুলের পবিত্র ভূমিতে রূপান্তর করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ফুল উৎসব ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এ উৎসবে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব, বই উৎসব, ভিআর গেইম, ভায়োলিন শো, পুতুল নাচ, ১৩৬ প্রজাতির ফুলের সমারোহ, ২৪ থেকে ২৫ জানুয়ারি মাল্টিকালচারাল ফেস্টিভ্যাল, ৩১ জানুয়ারি ঘুড়ি উৎসব, ফুলের সাজে একদিন, ১৭ থেকে ২৩ জানুয়ারি পিঠা উৎসব, ১০ থেকে ১১ জানুয়ারি লেজার লাইট শো ও ১ থেকে ২ ফেব্রুয়ারি মুভি শো। মাসব্যাপী এ ফুল উৎসবের প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকবে। বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

ফুল উৎসবে সৌরভ ছড়াচ্ছে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, অপরাজিতা, চেরি, জাকারান্ডা, উইলো, টিউলিপ, উইস্টেরিয়াসহ দেশি-বিদেশি ১৩৬ প্রজাতির দুই লাখের অধিক বাহারি ফুল। উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজনসহ নানা আয়োজন। ফুল উৎসবে টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ৫০ টাকা।

উল্লেখ্য, ১৯৪ একর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠা ডিসি পার্কে তিনটি বিশাল আয়তনের পুকুর রয়েছে। আরও রয়েছে ফুডকোর্ট, পর্যটকদের বসার স্থান, সেলফি কর্নার, অনুষ্ঠানস্থল, ভাসমান ফুল বাগান, হাটা চলার উন্মুক্ত স্থান, অস্থায়ী খেলার মাঠ, স্থায়ী ফুলের বাগান, শিশুদের খেলার মাঠ, ভিআইপি জোন, কন্ট্রোল রুম, রেস্টুরেন্ট, ফুড কর্নার, সানসেড ভিউ পয়েন্ট, টিউলিপ গার্ডেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান কর্ণার ও পাবলিক টয়লেট।