শিরোনাম
।। মো.এনামুল।।
পটুয়াখালী, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫(বাসস) : নানান সংকটে জর্জরিত জেলার কলাপাড়ার ৫০ শয্যার হাসপাতালটি। ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে আসা রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে। এছাড়াও খাবারের মান, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ নানান অভিযোগ করছেন হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া রোগীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাপাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। মাত্র ৩-৪ জন চিকিৎসক তাদের অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে এতো সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন না। বাধ্য হয়ে ভিজিট দিয়ে রোগীদের বাইরের চেম্বারে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। ফলে দরিদ্র অসহায় রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। একইভাবে ভর্তি হওয়া রোগীর চাপও থাকছে অনেক বেশি।
কলাপাড়া উপজেলা সদরের ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে দেখা যায়, শয্যার চেয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। উপজেলা সদরসহ কুয়াকাটা এবং মহিপুর নিয়ে মাত্র ১১ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসককে অধিকাংশ সময় প্রশাসনিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক প্রেষণে পটুয়াখালী রয়েছেন। অথচ চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৬ জনের। কলাপাড়া উপজেলা সদরে মাত্র চারজন চিকিৎসক বহির্বিভাগে দৈনিক তিন-সাড়ে তিনশ রোগীর চিকিৎসা সেবা সামাল দিচ্ছেন। যাতে একজন রোগীকে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় দেয়া সম্ভব নয়। চিকিৎসক সংকটে জরুরি বিভাগ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। একইভাবে কর্মচারীর ৭৬টি পদ খালি রয়েছে। সমস্যার যেন শেষ নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করাতে হয় আউট সোর্সিংয়ের জনবল দিয়ে।
জানা যায়, হাসপাতালে সরকারিভাবে টাইফয়েড, হেপাটাইটিস বি-সি, প্রেগনেন্সী, কিডনি, জন্ডিস, এইডস ভাইরাস, এক্সরে, ডায়াবেটিকসহ অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা কম মূল্যে করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ, কতিপয় চিকিৎসক তাদের নিজেদের পছন্দের ক্লিনিকে পরীক্ষার জন্য পাঠান। তবে বেশ কিছু ওষুধপত্র রোগীরা বিনামূল্যে পান। কিন্তু এ বছরের জুন মাসের পর থেকে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার জরুরি কিছু মেডিসিন ঠিকাদার সরবরাহ না করায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । হাসপাতালের টয়লেট পরিচ্ছন্নতা নিয়ে রোগীদের অভিযোগ রয়েছে। কতিপয় নার্স-আয়া, ক্লিনারদের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহারের কথা শোনা গেছে।
রোগীদের খাবারের মান নিয়ে উঠেছে ব্যাপক অভিযোগ। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া এক রোগী জানান, চারদিন আগে তিনি ভর্তি হয়েছেন। কিছু ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে পাচ্ছেন, বাইরে থেকেও কিনতে হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সকালে রুটি আর একটি কলা দেওয়া হয়েছে। রাতে ও দুপুরে দেওয়া হয়েছে ডিম আলুর ঝোল। এমটাই চলে অধিকাংশ দিন। তবে দুপুরে বয়লার মুরগি রান্নার কথা জানালেন বাবুর্চি।
কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জেএইচ খান লেলিন জানান, কলাপাড়া উপজেলা ছাড়াও পাশের আমতলী, তালতলী ও রাঙ্গাবালী উপজেলার অসংখ্য রোগী এই হাসপাতালে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন চিকিৎসক সংকট দূর হওয়া প্রয়োজন। আর খাবারের মান নিয়ে ঠিকাদারকে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।