বাসস
  ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৪৮

আধুনিক ভাষ্কর্য শিল্পী নভেরাকে নিয়ে আরো বেশি গবেষণা ও চর্চা দরকার: আলোচনা সভায় বক্তারা

ঢাকা, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : আধুনিক ভাস্কর্য শিল্পের অন্যতম অগ্রদূত নভেরা আহমেদকে নিয়ে আরো বেশি গবেষণা ও চর্চা করা দরকার বলে মনে করছেন বক্তারা। 

আজ বিকেলে  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ৬ষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী ২০২৪ উপলক্ষে ‘আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক এক গবেষণা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় বিশিষ্ট নভেরা গবেষক সাখাওয়াত টিপু ‘আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।   তিনি বলেন. বিংশ শতাব্দীর প্রথম বাংলাদেশি আধুনিক ভাস্কর নভেরা আহমেদ পূর্ব-বাংলার আধুনিক ভাস্কর্যের পথিকৃত হিসেবে আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে। 

নভেরা আহমেদকে পূর্ব-বাংলার আধুনিক ভাস্কর্যের পথিকৃত হিসেবে গণ্য করে প্রবন্ধে তিনি আরো বলেন, রামকিঙ্কর  যেমন ভারতের, নভেরা আহমেদ বাংলাদেশের। ভারতীয় উপমহাদেশের  চিত্রকর্মই  আমাদের  দেশের মূল ভিত্তি।  পরবর্তীতে  যুগে যুগে তা আধুনিকতায়  বিকশিত  হয়েছে। 

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ, বিশিষ্ট নভেরা গবেষক রেজাউল করিম সুমন ও দীপ্তি দত্ত। 
স¦াগত বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান ।

ড.সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে আমাদেরকে অবশ্যই ধর্মীয় বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ভাস্কর্য শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় আমরা নানা চ্যালেঞ্ছের মুখোমুখি হবো।

নভেরা গবেষক রেজাউল করিম সুমন বলেন, ২০১৫ সালের ৬ মে তারিখে তার  মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ঠিক কত হয়েছিল তা একটি ন্যায্য প্রশ্ন। নভেরা আহমেদের বাংলাদেশী পাসপোর্টে তার জন্মসাল ১৯৩৯ দেয়া আছে। মৃত্যুর কিছু আগে ২০১৪ সালে নভেরা আহমেদের একটি চিত্রকর্ম প্রদর্শনী প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ সময়  তার ক্যাটালগেও তার জন্মসাল ১৯৩৯ বলে উল্লেখ করা হয়। পাসপোর্টের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতেই তা করা হয়েছিল বলে অনুমান করা অন্যায্য হবে না। ১৯৬২ সালে জালাল উদ্দীনের লেখা "আর্ট অব পাকিস্তান" গ্রন্থে নভেরা আহমেদের জীবনীতে  জন্মসাল ১৯৩৫ উল্লেখ করা হয়। তার ছোট ভাইয়ের জন্ম যদি ১৯৩৩ সাল হয় তাহলে তার (নভেরা) জন্ম ১৯৩০ সালেই হবে বলে অনেকে অভিমত দিয়েছেন। তার পৈতৃক বাড়ি ছিল চট্টগ্রামে। বাবার চাকরিসূত্রে কলকাতায় অবস্থানকালে সেখানকার লরেটা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। পরে আইন পড়ার জন্য লন্ডনে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি ১৯৫১ সালে ভর্তি হন ‘ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটস’-এ, ‘ডিপ্লোমা ইন মডেলিং ও স্কাল্পচার’ কোর্সে। সেখান থেকে ডিপ্লোমা শেষ করার পর তিনি ইতালির ফ্লোরেন্স ও ভেনিসে ভাস্কর্য বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। 

দীপ্তি দত্ত বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে আধুনিক আর নারীবাদী, আদি, প্রাগৈতিহাসিক  শব্দ নিয়ে গবেষণা না করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।  নভেরা আহমেদের বিভিন্ন চিত্র কর্মের কথা উল্লেখ করে  তিনি  আরো বলেন, বিশ্ব বাজারের প্রতি লক্ষ্য রেখে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।