শিরোনাম
ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপ না করার ফলে সরকার প্রতি বছর ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। তামাকের ওপর বেশি পরিমাণ করারোপ করা হলে একদিকে ধূমপান কমবে এবং অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয় অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেটে কার্যকর করারোপ বিষয়ক এই সংবাদ সম্মেলনে তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের পঞ্চম তামাক ব্যবহারকারী দেশ। তামাকের উচ্চ ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক লোকের মৃত্যু হচ্ছে। এরমধ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মৃত্যুর হার প্রায় কাছাকাছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে সিগারেটের খুচরা মূল্য বাড়ানোর পাশাপাশি সকল স্তরের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে ধূমপানের হার যেমন কমবে তেমনি সরকার বাড়তি রাজস্বও পাবে। তবে অর্থ বছরের শুরুতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া গেলে আরও বেশি সুফল পাওয়া যেতো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল, একই ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজানা করিম এবং বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম, শাহীন উল আলম, বাবু কামরুজ্জামান এবং সাবেক জাতীয় ফুটবলার কায়সার হামিদ ও শেখ মো. আসলাম সংবাদ সম্মেলনে তামাকের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকে নিয়ে আলোচনা করেন।
উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন, সিগারেটে কার্যকর করারোপ না করার ফলে সরকার প্রতি বছর ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি সিগারেটে যথাযথ করারোপের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে করে ৫ হাজার কোটি টাকার মতো বাড়তি রাজস্ব পাওয়া যবে। তবে এমন উদ্যোগ অর্থবছরের শুরুতে নেয়া হলে আরও প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব যোগ করা যেতো। রাজস্ব বাড়া-কমা নয়, বরং আগামী প্রজন্মকে সিগারেটের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়ার জন্যই সিগারেটে যথাযথ করারোপ করা দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিম্ন স্তরের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে অন্য উচ্চতর স্তরের সিগারেটগুলোর সমান (৬৭ শতাংশ) করা হয়েছে। যেহেতু কিশোর-তরুণরা মূলত নিম্ন স্তরের সিগারেটই ব্যবহার করেন, তাই এই স্তরের সিগারেটের ওপর কর হার বাড়ানো ভালো উদ্যোগ। সিগারেটে কার্যকর করারোপের মাধ্যমে আসন্ন বছরে ধূমপানের হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানোর পাশাপাশি চলতি বছরের চেয়ে ২০ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব পাওয়া সম্ভব হবে।