বাসস
  ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৯

রংপুরে আলু ক্ষেতে বালাইনাশক স্প্রে করছেন কৃষকরা

আলু ক্ষেতে বালাইনাশক স্প্রে করছেন কৃষক। ছবি: বাসস

।। রেজাউল করিম মানিক ।।

রংপুর, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আলু ক্ষেত ছত্রাক ও রোগ-বলাইয়ের হাত থেকে রক্ষায় বালাইনাশক স্প্রে করছেন কৃষকরা। 

কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে ফসলের মাঠ। ভালো দাম হওয়ায় জেলায় ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, এ্যালুয়েট, পাগড়িসহ বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।

এছাড়া কেউ জমিতে থাকা আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ ও সেচ দিচ্ছেন।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ৮০ হাজার ৯১০ মেট্রিক টন।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

এদিকে, রংপুরের ৮টি উপজেলায় প্রচুর আলুর আবাদ হয়েছে। বাজারে আলুর ভালো দাম থাকায় আলু চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। ভোর থেকে শুরু করে সারাদিন আলু ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

তবে গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশা আর শৈতপ্রবাহে কৃষকরা হতাশায় পড়েছেন। কারণ কুয়াশা এবং শৈতপ্রবাহের কারণে পাতা পচন রোগ দেখা দেয়। এ জন্য আলু ক্ষেতে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করছেন কৃষকরা। মুখে মাস্ক ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে জমিতে ওষুধ স্প্রে করতে দেখা যায় তাদের। আলু ক্ষেতে রোগ প্রতিরোধে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষক।

এছাড়া কেউ জমিতে থাকা আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ ও সেচ দিচ্ছেন। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে আলু ক্ষেত পরিচর্যার কাজ। বাজারে আলুর চড়া দামের কারণে এবার চাষের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। আলুর আবাদ নিয়ে প্রান্তিক কৃষকরা রঙিন স্বপ্ন দেখছেন। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাঠে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন কৃষক-কৃষাণীরা।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আলু গাছের সারিতে মাটি তুলে দেওয়া ও সরিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করছেন কৃষকরা। এ জেলার অর্থকরী অন্যতম ফসলের মধ্যে একটি আলুর আবাদ। আলুর উৎপাদন ও মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে আলু চাষীদের নানান ধরনের রোগবালাই দমনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

রংপুরের  কাউনিয়া  উপজেলার অন্নদানগর গ্রামের আলু চাষী বোরহান উদ্দিন জানান, ঘন কুয়াশা ও শৈতপ্রবাহে আলু গাছে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এ জন্য আগে থেকে ক্ষেতে ছত্রাকনাশক ওধুষ স্প্রে করা হচ্ছে। যাতে আলু গাছে পচন রোগ না ধরে। এছাড়া ভালো ফলনের আশায় সময়মতো সার ও পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে।

পীরগাছা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের আলু চাষী রিংকু মিয়া বলেন, ৬ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি আবহাওয়া ভালো রয়েছে তবে ঘন কুয়াশার কারনে যাতে আলু ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য নিয়মিত স্প্রে করছি।

রংপুর  কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বার্তা সংস্থা বাসস কে জানান, আলু ক্ষেতের জন্য সবচেয়ে বেশি শঙ্কার কারণ ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা বেশিদিন থাকলে আলুর লেট ব্লাইট হতে পারে। এ রোগ প্রতিরোধে চাষীদের নিয়মিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আলুর জন্য বিখ্যাত রংপুর অঞ্চলে, এ বছরও জেলার আলু চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। যা এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলারও চাহিদা মেটাবে।