শিরোনাম
রংপুর, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): রংপুরের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে পাম্প ও ড্রেজার বা অন্য কোনো মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমির উপরি-ভাগের উর্বর মাটি বা টপসয়েল কাটাকাটি এবং পার্শ্ববর্তী জমির ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্যথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে কঠোরভাবে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন নদ-নদী হতে প্রায়ই পাম্প ও ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমির উপরি-ভাগের উর্বর মাটি বা টপসয়েল কাটার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, যা বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। উক্ত আইনের বর্ণিত রয়েছে যে, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্যকোনো মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া উক্ত আইনের উর্বর কৃষি জমির মাটি কাটা যাবে না।বাণিজ্যিক উদ্দেশে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কৃষি জমির উর্বর উপরি-ভাগের মাটি বিনষ্ট করা যাবে না। পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্রে ক্ষতি সাধন করা যাবে না। ড্রেজারের মাধ্যমে বা অন্যকোনো প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না, যাতে উক্ত জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি হয় বা ধসের উদ্ভব হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের অনূর্ধ্ব দুই বছর কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। জেলা প্রশাসন, উক্ত বিষয়ে কঠোরভাবে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এমতাবস্থায়, জেলার সব জনসাধারণকে নদী, পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষা ও কৃষি জমির সুরক্ষার স্বার্থে 'বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০' মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পরিবেশ আন্দোলনে থাকা সংগঠকরা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক ও নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বাসসকে বলেন, বালু উত্তোলন, নদীর দখল-দূষণসহ নদ-নদীর যেকোনো রকম ক্ষতির বিষয়ে রংপুর বিভাগে যত জেলায় আমরা প্রতিকার চেয়েছি, সেটি পেয়েছি। রংপুর জেলা প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা আশা করছি, বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং আইনের প্রয়োগ করবে।
২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু তা না মেনে এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।