শিরোনাম
ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও জিম্মি মুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় শুক্রবার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ক্ষমতাসীন জোট বিরোধীতা না করলেও কমপক্ষে মন্ত্রিসভার দুইজন সদস্য যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, আগামী ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি কার্যকর হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আত্মবিশ্বাসী।
ইসরাইলের মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি রোববার থেকে কার্যকর হবে। এতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের সাথে ইসরাইলি জিম্মি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, পরে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির শর্তাবলী চূড়ান্ত করা হবে।
গাজায় উদ্ধারকারীরা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গত দিনে অঞ্চল জুড়ে প্রায় ৫০টি স্থাপনায় আঘাত হানার কথা জানিয়েছে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় বৃহস্পতিবার হামাসের ওপর শেষ মুহূর্তের ছাড় আদায়ের জন্য চুক্তির মূল অংশগুলো লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে, তবে এই অভিযোগ হামাস অস্বীকার করেছে।
এরপর শুক্রবার ভোরে তার অফিস জানায়, ‘জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে একটি চুক্তি’ সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি দিনের শেষের দিকে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে আরো বলা হয়, ‘সরকার বৈঠকে চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য আলোচনা করবে।’
কট্টর-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ চুক্তিটি অনুমোদন করলে তিনি ও তার দলের সহকর্মীরা সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন।’
কট্টর-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ চুক্তিটিকে ‘বিপজ্জনক চুক্তি’ অভিহিত করে যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছেন।
তবে কয়েক মাস ধরে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নির্ধারিত সময়েই এগিয়ে যাবে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী, আমি পুরোপুরি আশা করছি রোববার থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে, যেমনটি আমরা বলেছি।’
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, বুধবার চুক্তি ঘোষণার পর ইসরাইল ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের বেশ ক’টি এলাকায় বোমা হামলা চালালে কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং শত শত আহত হয়েছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা, এজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড সতর্ক করে দিয়েছে ইসরাইলি হামলা চুক্তির অধীনে মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে এবং তাদের ‘মুক্তি ট্রাজেডিতে পরিণত হতে পারে।’
৭ অক্টোবরের হামাসের হামলা ছিল ইসরাইলের ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক। ইসরাইলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী এএফপি’র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ওই হামলায় ১,২১০ জন নিহত হয়। যাদের বেশির ভাগই ছিল বেসামরিক নাগরিক। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতে সেদিন হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যাদের ৯৪ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছে এবং ৩৪ জন নিহত হয়েছে।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরবর্তীতে ইসরাইলের অব্যাহত অভিযানে গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ৪৬,৭৮৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রায় ১৭ হাজার শিশু নিহত হয়েছে।