শিরোনাম
মো. এনামুল
পটুয়াখালী, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : জেলার অন্যতম সফল উদ্যোক্তা নাহিদ ইসলাম (৩২)। তিনি শখের বসে ছোট খাঁচায় ১৬টি কোয়েল পাখির পালন শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে আজ বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পাখি পালন করে সাফল্যের মুখ দেখছেন নাহিদ। এখন তিনি সফল একজন কোয়েল খামারি।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার হেতালিয়া গ্রামের শিক্ষিত যুবক নাহিদ ইসলাম। তার পিতা মাইনুল ইসলাম স্বপন। মাদ্রাসায় ফাজিল শেষ বর্ষের ছাত্র নাহিদের খামারে বর্তমানে প্রায় পাঁচহাজার কোয়েল পাখি রয়েছে, যা থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে চার হাজারেরও বেশি ডিম।
বিপনন হচ্ছে কোয়েল পাখি ও ডিম। খাওয়ার উপযোগী কোয়েল পাখি প্রতিটি ৬০ টাকা এবং প্রতি হালি ডিম ১০ টাকা করে বিক্রি করছেন নাহিদ। স্থানীয়দের মধ্যে অতীতে কোয়েল পালন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের এতটা আগ্রহ না থাকলেও নাহিদের সাফল্যে অনেকেই কোয়েল পালনে ঝুঁকছেন। এছাড়া স্থানীয়ভাবে নতুন করে স্থান পেয়েছে কোয়েল পাখির মাংস ও ডিমের বাজার।
তরুন উদ্যোক্তা নাহিদ জানান, কয়েক বছর আগে আগে শখের বসে ছোট খাঁচায় করে ১৬টি কোয়েল পাখির পালন শুরু করেছিলেন। সেখান থেকেই কোয়েল পাখি নিয়ে তার কাজ শুরু। নানা সংকটেও হাল না ছেড়ে কোয়েল পাখির ডিম উৎপাদন ও পাখি পালনে মনোনিবেশ করেন তিনি। শুরুতে পরিবারের সদস্যরা এটিকে ভালোভাবে না নিলেও এখন সবাই প্রশংসা করছেন।
নাহিদ আরো জানান, তার খামারে প্রায় পাঁচহাজার কোয়েল পাখি রয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে উৎপাদন হচ্ছে চার হাজারেরও বেশি ডিম। প্রতিদিনই এই কোয়েল পাখির ফার্ম দেখতে স্থানীয়সহ অনেকেই আসছেন। অনেকে নাহিদের কাছ থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ নিয়ে বাচ্চা সংগ্রহ করে নতুন করে কোয়েল পাখি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
সফল উদ্যোক্তা নাহিদ জানান, একটি কোয়েল বছরে প্রায় দুইশ’ ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের ওজন ১৫ থেকে ২০ গ্রাম। দু’মাস বয়স থেকেই কোয়েল পাখি ডিম দিতে শুরু করে। এখন তিনি একটি বাচ্চা ফোটানোর মেশিন কিনে বাচ্চা উৎপাদন করারও পরিকল্পনা করছেন।
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে নাহিদ বলেন, ‘আমার কোনো পুঁজি ছিলো না। শুধু কাজ করার প্রবল ইচ্ছা ছিলো। আর আমার সেই ইচ্ছাটাই টাকা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব্যবস্থা করেছে। আমার ব্যবসার মূল বিনিয়োগ প্রবল ইচ্ছা শক্তি। তরুণদের উচিত ইচ্ছার দিকে ফোকাস দেয়া।’
স্থানীয়রা জানান, নাহিদকে দেখে এলাকার অনেকে কোয়েল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেক বেকার যুবক কর্মসংস্থানের জন্য উৎসাহিত হচ্ছেন। নাহিদ একজন সফল ও স্বাবলম্বী উদ্যোক্তা।
পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক সরদার জানান, কোয়েল পালনে এই জেলায় যুবকদের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কোয়েল পাখির ডিম এবং কোয়েলের মাংসের একটি চাহিদা রয়েছে।
তিনি বলেন, নাহিদ একজন সফল উদ্যোক্তা। তাকে সম্ভাব্য সবধরনের সহায়তা করা হবে।