শিরোনাম
।।কাশেম মাহমুদ ।।
ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে রাষ্ট্রক্ষমতাকে যথেচ্ছা ব্যবহার করে অন্যায়, অবৈধ এবং তথ্য গোপনের মাধ্যমে দুর্নীতিকে পারিবারিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ায় সাবেক প্রধানন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ঘৃণা ও ধিক্কারের আওয়াজ উঠেছে।
শেখ পরিবারের এমন দুর্নীতির সংবাদে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন এবং স্বাধীনচেতা বাংলাদেশের মানুষের আত্মসম্মানে আঘাত করায় শেখ হাসিনাসহ শেখ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের বিচার দাবি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবি, রাজনীতিক এবং সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের সাথে পৃথকভাবে আলোচনা করে তাদের এই অভিমত পাওয়া গেছে।
পেশাজীবী নেতারা বলেন, রাষ্ট্র পুনর্গঠন, মেরামত ও রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে হাত দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আশা করবো, রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে যারা দুর্নীতি করে পালিয়ে গেছে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক, দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ প্লট, জমিসহ বিভিন্ন স্থাবর অস্থাবর সম্পদ গড়ার অভিযোগ উঠেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ ১৫ বছরে হাতে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ সব দুর্নীতির তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি উঠেছে আজ।
পেশাজীবী নেতারা বলেন, সরকারি প্লট, হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কমিশন বাণিজ্য, টাকা পাচার, বিভিন্ন দেশে প্লট-ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসায় বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে শেখ পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি শিরোনাম হয়েছে। সেই শিরোনাম থেকে বৃটিশ মন্ত্রিসভা থেকে সম্প্রতি পদত্যাগী শেখ পরিবারের সদস্যও বাদ যাননি। যা দেশ এবং দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের জন্য অসম্মানের। এর বিচার হওয়া উচিৎ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভাইস চ্যান্সেলর মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আকতার বাসসকে জানান, দেশটাকে যেভাবে পরিবারতন্ত্র ও মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত করেছিল, যেভাবে সংবিধানকে নিজের মতো করেছিল, তাতে পতিত স্বৈরাচারী দলটি নির্বাচনের নামে নাটক সাজিয়ে আজীবন রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতো। আল্লাহর অশেষ রহমত যে, ছাত্ররা এদেশটাকে রক্ষা করেছে। জাতিকে বাক শক্তিহীন প্রজার কলঙ্ক থেকে পরিত্রাণ দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় চবি ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পান প্রফেসর ইয়াহিয়া আকতার। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সব জায়গায় দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে অর্থ পাচার হয়ে গেল, উদ্ধার হয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হলো, ফেরৎ আসেনি। অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়লো, সেটির বিচার হয়নি। বর্তমান সরকারকে শক্ত হাতে আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে পলাতক এবং আটক বাকিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্ররা জাতিকে উদ্ধার করে যে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে, তা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা কেউ ইতিহাস থেকে দায়মুক্তি পাবো না। এমন সুযোগ জাতির জীবনে বারবার আসে না। ৭১-এ এসেছিল। ২০২৪-এ এসেছে। ৭১-এ রিলিফ চুরি, অনৈক্য, রাজনৈতিক বিভাজন, একদলীয় বাকশালী শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, রাজনৈতিক ও মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করায় আওয়ামী লীগের অনিবার্য পরিণতি হয়েছিল। ২০২৪ সালেও আমাদের গর্বের প্রতীক হিসেবে ছাত্ররা বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে। নতুন স্বাধীনতা এনেছে। এটিও যেন ম্লান না হয়।
চবি ভিসি বলেন, বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ভিক্তিতে অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করেছে। তারা কাজও করছে। কিন্তু আমার দাবি ছিল একটা শিক্ষা সংস্কার কমিশন করা। সেটি করা হয়নি। এটিই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এই মেরুদণ্ডের চিকিৎসা না করে অন্যান্য অঙ্গের চিকিৎসা করা হলে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূর্ণতা পাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কাজী আকতার হামিদ বাসসকে জানান, ক্ষমতা হচ্ছে রাষ্ট্রের দেওয়া আমানত। সেই রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা দেশ পরিচালনায় জনগণের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠে তারা বা তাদের পরিবার দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়লে রাষ্ট্রকে তা অত্যধিক গুরুত্বের সাথে তদন্তে নেওয়া উচিত। সরকারের দায়িত্ব ও সততার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ।
ড. আকতার হামিদ বলেন, ইতোমধ্যে তদন্ত ও অনুসন্ধানে যেসব অভিযোগ এসেছে এবং মামলা হয়েছে তা ভয়ানক। দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা স্তম্ভিত। জাতি হিসেবে আমরা ভাবি নাই শেখ পরিবার এমন ভয়ানক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হতে পারে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে যে সব দুর্নীতির অভিযোগ ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে, সেসব বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং স্বচ্ছতার ভিক্তিতে তদন্ত করা প্রয়োজন। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারের জন্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়গুলো জাতির সামনে উম্মোচন করা উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বাসসকে বলেন, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতিকে পারিবারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে কুক্ষিগত করে ধ্বংস করেছে। অনুগত বিচারক নিয়োগ দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে তাদের ফরমায়েশি রায়ের মাধমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল ও হয়রানির উদ্দেশে ব্যবহার করেছে। লুটপাট, দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য, দেশবিরোধী প্রকল্প চুক্তি, অন্য দেশের স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে আর্থিক লাভবান হওয়া, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করার মতো ঘৃণ্য কাজ শেখ হাসিনা অবলীলায় করে গেছে। কারো কোনো প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না। প্রতিবাদকারীদের গুম খুন করে রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছিল ফ্যাসিবাদি স্বৈরাচার। রাষ্ট্রের সম্পদ কুক্ষিগত করার লোভ শেখ হাসিনা বরাবরই করেছে। মাত্র ১ টাকায় গণভবন দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও জনরোষে তা দখলে নিতে পারেনি।
নিতাই রায় বলেন, গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা দেশের সাধারণ নির্বাচন এমনকি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বানগুলোতে পর্যন্ত নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে। দিনের ভোট রাতে এবং ভীতি প্রদর্শন করে কাউকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার মতো নিকৃষ্ট স্বেচ্ছাচারিতার নোংড়া উদাহরণ বিশ্বে একমাত্র শেখ হাসিার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। এ সবের বিচার যদি না হয়, তাহলে পৃথিবীর দেশে দেশে স্বৈরাচারের উত্থান হওয়ার সম্ভানা রয়েছে। এ জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এন বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো উচিৎ।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এস্টেট শাখার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা সবাই জানতাম শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ পরিবারের ৬ জনের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠা জমি রাতারাতি বরাদ্দ করে ফাইলবন্দি করা হয়েছে। দুদকের তদন্তে যাদের নাম এসেছে তারা এই দুর্নীতির সাথে সরাসরি জড়িত। এরা চাকরিতে আর্থিক ও প্রশাসনিক বেনিফিশিয়ারি। এ বিষয়ে আমাদের কারো মুখ খোলার সাহস ছিল না। বরাদ্দের ফাইলগুলো নিয়ম অনুযায়ী রাজউকের এস্টেট শাখায় সংরক্ষিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমরা কখনো ফাইল চোখে দেখিনি। ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দের ৬টি পৃথক ফাইল চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছিল।’
ওই কর্মকর্তা জানান, ‘রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা শহরে আবেদনকারীর কোনো ফ্ল্যাট, জমি কিংবা বাড়ি নেই মর্মে হলফনামায় ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত ৬ ব্যক্তি এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। এটি বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত। এছাড়া জমির মূল্য পরিশোধে পে-অর্ডার, কোন ব্যাংক হিসাবখাত থেকে পরিশোধিত হয়েছে। কোন তৃতীয় ব্যক্তি এ টাকা পরিশোধে সহযোগিতা করেছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা দরকার। তাহলে দুর্নীতির আরো অসঙ্গতি বের হয়ে আসবে।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অপর ৫ সদস্যের নামে ৬০ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করা হয় গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকতারা জানান, জমি রেজিস্ট্রির জন্য সাব রেজিস্ট্রারকে ওই দিন গণভবনে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। তিনি শুধু দলিল রেজিস্ট্রিতে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু ফাইলগুলো সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আনতে পারেননি। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সাব রেজিস্ট্রারকে গণভবনে নেওয়ার আগে কোভিড টেস্টসহ বিভিন্ন তথ্য যাছাই বাছাই করা হয়।
আহমদ উল্লাহ নামে একজন রিকসা চালকের সাথে বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে কথা হয়। জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনার পতনের পর তার পরিবারের বিভিন্ন দুর্নীতির কথা বের হয়ে আসছে। মিথ্যা ঘোষণা ও তথ্য দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে মেয়ে, বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার ছেলে মেয়ের নামে পুর্বাচলে ৬০ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি নেওয়ার বিষয়ে।
আহমদ উল্লাহ কুমিল্লার আঞ্চলিক শব্দমিশ্রণে বলেন, শুধু জমির কথা বলেন ক্যান। কী নেইনি শেখ হাসিনা। এ দেশের মানুষের জীবন থেইক্যা ১৫ বছর কাইড়া নিছে। হাজার হাজার মানুষরে বিনাদোষে জেল খাটাইছে। ভোটের অধিকার, নিজের ইচ্ছেমতো বিচারের রায়- এসব কী আর ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব? সম্ভব না। যেভাবে ভোট ডাকাতি করেছে, লুটপাট করেছে, আওয়ামী লীগ গ্রামে-গঞ্জে যেভাবে নির্যাতন করেছে, এসবের কারণে আজ পুরো পরিবার দেশ ছাড়া হয়েছে।
আহমদ উল্লাহ বলেন, স্বৈরাচার কিছুদিন টিকে। বেশি দিন টিকে না। শেখ বংশ আজ বাংলাদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে গেছে। হাসিনা পালানোর পর দেশের মানুষ খুশি। আমরা কেটে খাওয়া মানুষ। দু’বেলা খাবার পেলেই শান্তি। ইউনূস সরকার (ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার) যেভাবে আগাইতেছে, আগাইতে দেন। সবাই সহযোগিতা করেন। নির্বাচন হোক। সংস্কার হোক। দেশ শান্তিতে চলুক।
ইতোমধ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশনের (এফবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের সম্পদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিার ছোট বোন শেখ রেহেনার মেয়ে বৃটিশ রাজনীতিক ও এমপি টিউলিপ সিদ্দিকর ফ্ল্যাট ও কমিশন বাণিজ্যের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে এনিয়ে বিস্তর সমালোচনা আসায় এখন দেশের ভেতরে বাইরে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিকরা ও আইনপ্রণেতারাও নিন্দনীয় ভাষায় সমাালোচনা ও বিচার দাবি করেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে।
দুদক জানিয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত ও বহাল থাকা অবস্থায় অবস্থায় নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। নিজে প্লট নিয়েছেন এবং নিজ সন্তানসহ পরিবারের আরো ৫ জনকে প্লট পাইয়ে দিয়ে বস্তুত দখলে নিয়েছেন। ফলে রুজুকৃত সব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদেরও আসামি করা হয়েছে।
দুদক বলেছে, তাদের তদন্তে তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ৬ জনের নামে প্লট বরাদ্দের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় দুদকের সমন্বিত জেলা ঢাকা-১ এ মামলাগুলো দায়ের করেছে।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার নামে বরাদ্দ হওয়া ১০ কাঠার প্লট নম্বর হচ্ছে ০০৯। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে রাজউক প্লটের বরাদ্দপত্র দেয়। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এর প্লট নম্বর ০১৫, এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এর প্লট নম্বর ০১৭ ।
শেখ রেহানার নামে বরাদ্দ দেওয়া ১০ কাঠার প্লট নম্বর হচ্ছে ০১৩, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের প্লট নম্বর ০১১ এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের প্লট নম্বর ০১৯। শেখ হাসিনা পরিবারের ৬ জনের নামে বরাদ্দ হওয়া ১০ কাঠার প্রত্যেকটি প্লট পাশাপাশি অবস্থিত এবং ৬০ কাঠার একটি বাউন্ডারি।