শিরোনাম
দিনাজপুর, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার পর গত ৫৪ বছরে দেশে দলবাজির নামে যারা গুম, খুন, হত্যা, ছিনতাই, রাহাজানি, লুন্ঠন, ও নারী নির্যাতনসহ ফৌজদারি অপরাধ করেছে তাদের বিচার করতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে দিনাজপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত সময়ে বিচার বিভাগকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। বিগত সময়ের এসব ঘটনায় যারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে,তাদের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে হবে। সংঘটিত অপরাধের বিচার করতে পারলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে দেশের সম্পদ ২৬ লক্ষ কোটি টাকা লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা ভেবেছিল দেশের মানুষকে যেন তেনো ভাবে ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে বোকা বানাবে। কিন্তু এদেশের মানুষ গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার ওই সব অপকর্মের সঠিক জবাব দিয়েছে। এখন দেশে একটি শান্তির বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যুব সমাজের এই ত্যাগকে সকলে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। তবেই যুব সমাজের আত্মত্যাগকে সঠিক মূল্যায়ন করা যাবে।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের (দিনাজপুর) একজন বিচারক শপথ নিয়ে নিজেকে দলীয় বিচারক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। বিচারকের শপথ ভঙ্গের জন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হওয়া উচিত।
জামায়াত আমির বলেন, শেখ হাসিনার সরকার লাখ লাখ মিথ্যা মামলা দিয়ে জামাতের কর্মীদের জেলহাজতে পাঠিয়েছিল। জামায়াতের ৫ জন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াতের বিরুদ্ধে অপবাদ এই দলটি ক্ষমতায় আসলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। কিন্তু তা আজ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নারীরা কর্মী সম্মেলনে যোগদান করে তাদের অবদান ঠিকই রেখেছেন। আগামী দিনে যদি সুযোগ হয় জামায়াত নির্বাচনে জয় যুক্ত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে, নারী-পুরুষ সকলের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
জেলা জামাতের আমির অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের সরকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. আব্দুল হালিম, রংপুর বিভাগীয় জামায়াতের আমির ও পরিচালক অধ্যক্ষ মো. মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান বেলাল, ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের সেক্রেটারী, মো. দেলোয়ার হোসাইন, ঠাকুরগাঁও জেলা জামাতের সাবেক আমির ও কর্মপরিষদ সদস্য মোঃ আব্দুল হাকিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, কর্ম পরিষদ সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন মোল্লা,দিনাজপুর জেলা জামায়াতের হিন্দু ইউনিটির সদস্য বিরামপুর মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার, নিতাই চন্দ্র দেবনাথ ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি দিনাজপুর জেলা জামাতের সহকারী সেক্রেটারি, রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমুখ। কর্মী সম্মেলনটি পরিচালনা করেন দিনাজপুর জেলা জামাতের সেক্রেটারি ড. মহাদ্দেস মো. এনামুল হক।
কর্মী সম্মেলনে দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলা ৯টি পৌরসভার জামায়াতের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাসহ বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত হয়েছিল। এ ছাড়াও সম্মেলনে রংপুর বিভাগের অপর ৭টি জেলার নেতাকর্মীরা সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছে বলে জেলা জামাতের পক্ষ থেকে বলা হয়।