শিরোনাম
বাগেরহাট, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : মাছ ধরার অপকৌশল হিসেবে বাঁশের পাটা দিয়ে ঘিরে রাখায় বলেশ্বর নদী এখন মৃত প্রায়। বাগেরহাট জেলার কচুয়া বিপরীতে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উভয় অঞ্চলের এক শ্রেণির জেলের মাছ ধরার নেশায় প্রবাহমান বলেশ্বর নদীটি এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।
পুরো নদীকে ঘিরে বাঁশের পাটা স্থায়ীভাবে রাখার কারনে দিনে দিনে বলেশ্বর নদীর নাব্যতা হারাতে বসেছে। নদী এখন সিল্টেড হওয়ায় বাগেরহাট থেকে টাবুরে নৌকা করে যাত্রীরা খুব অল্প সময় ও কম খরচে তাদের গন্তব্য যেতে পারছেনা। এছাড়াও নদীতে মালবাহী ছোট ছোট লঞ্চ, নৌকা যাতায়াতে হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় ভাষা, ছিটাবাড়ি, লড়ারকুল, মাদারতলা, বয়ারসিংগা, শিয়ালকাঠি, মাধবকাঠি সহ অসংখ্য গ্রামের মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
সরকারের দেয়া নদী শাষনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একশ্রেণির দুষ্ট চক্র মাছ ধরার নামে বছরের পর বছর ধরে নদীর এ পাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত বাঁশের পাটা দিয়ে ঘিরে ফেলানোর কারণে বলেশ্বর নদীটি এখন মৃত প্রায় এবং এখানকার কৃষি জমিতে যে বাম্পার ফলন হতো তা এখন আর দেখা যায়না।
বলেশ্বর নদীর পানি মিষ্টি হওয়ায় নদীর দু'পাশ জুড়ে আখ,কলই, মটরশুঁটি, ধান,সরিষা ক্ষেতের বিপুল সমাহার এখন আর চোখে পড়ে না। ১৯৯২ সালে বাগেরহাটের এমপি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমান এই নদীটি খনন করেন। ধীরে ধীরে এখন বলেশ্বরের প্রবাহ কমে পুরোটাই চরে রুপান্তর হয়েছে। বলেশ্বর নদীটি কচুয়া থেকে চিতলমারী, মোল্লাহাটের মধুমতী নদীতে গিয়ে মিলেছে।
কচুয়ার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এস এম ওয়াজেদ আলী বাসসকে জানান, শত শত কৃষক তাদের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে লবন পানির কারণে জমিতে ভালো ফসল পাচ্ছেনা। তিনি অবিলম্বে তালেশ্বরের স্লুইসগেট অপসারণ করে বাগেরহাট ভৈরব নদীর খালের মুখে স্লুইসগেট নির্মান করলে লবন পানির প্রবেশ বন্ধ হবে। নদীর খনন কাজ করতে পারলে এখনকার শত শত মানুষ তার কর্মস্থলে পুনরায় পালবাড়ির লুপ্ত হওয়া মৃত শিল্পটি চালু হলে হাজারো মানুষ কর্মসংস্থান হবে। কচুয়া উপজেলার সন্তান অতিরিক্ত সচিব এম কেরামত আলী বাসসকে জানান, ইতোমধ্যে ১৬ কিলোমিটার খাল খননের কাজ কাজ শুরু হয়েছে। নদী খনন প্রক্রিয়াধীন আর অবৈধ দখলবাজদের উৎখাত করা হবে।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আবু নওশাদ দায়িত্ব গ্রহনের পর বলেশ্বর নদীতে দীর্ঘদিনের জট ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজটি অব্যাহত রয়েছে বলে বাসসকে জানান।