শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : ‘চব্বিশের রক্তক্ষয়ী জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পরিচালনাকারী খুনি হাসিনাসহ সকল হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রাম নগরের জামালখান সড়কে প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আমরণ অনশনে বসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্নের সময়সীমা আগামী ৩ দিনের মধ্যে জাতিকে জানানোর আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।
তাদের অনশন ভাঙ্গাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম মোবাইলে এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম সরাসরি উপস্থিত হয়ে সমন্বয়ক রাসেল আহমদসহ অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তারা খুনিদের বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্নের আইন উপদেষ্টার স্পষ্ট ঘোষণা দাবী করে অনশনে অনড় রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সড়কে অনশনে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এতে একপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। রাত ৯টা পর্যন্ত তারা সড়কেই অনশনে অবস্থান করছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বাসস’কে বলেন, সর্বশেষ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আমরা তাকে বলেছি, সিরিয়ায় নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের তিন দিনের মাথায় ৩৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। আমাদের এখানে ছয়মাস হয়ে গেছে, খুনিদের বিচার প্রক্রিয়ায় এত দেরি হচ্ছে কেন ? এখন পর্যন্ত কারো বিচার নিশ্চিত করা যায়নি, বিচার প্রক্রিয়ারও কোন অগ্রগতি দেখি না। অথচ খুনিদের অনেকেই আদালতে হাজিরা দিচ্ছে, তারা আপিল করতেছে, নানা তালবাহানা হচ্ছে।
কতদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার খুনিদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে করব। তবে কতদিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে সেটা আইন উপদেষ্টা বলতে পারবেন।
খুনিদের বিচার সম্পন্ন করার সময়সীমা সর্বোচ্চ তিন দিনের মধ্যে জাতিকে জানাতে হবে জানিয়ে সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, সরকার বিচার প্রক্রিয়া কতদিনের মধ্যে সম্পন্ন করবেন সেটা তিন দিনের মধ্যে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। নইলে এই অনশন আমরা আবারও দিব। এবং মৃত্যু অবধি আমাদের অনশন চলবে।
সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের এখনো বিচার হয়নি। অথচ তারা ঝটিকা মিছিল করছে। বিচার না হওয়ায় তারা সেই স্পর্ধা দেখাতে পারছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিচার প্রক্রিয়া অগ্রগতি না হবার কারণে এবং পুলিশের দুর্বলতার কারণে তারা এসব করার সাহস পেয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্ত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আওতায় এনে ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।
রাসেল আহমেদ বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে যারা জুলাই আন্দোলনে আমাদের ভাই-বোনদের ওপর গুলি চালিয়েছে, তাদের বিচারের জন্য যতদিন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না আমরা এখান থেকে উঠবো না। যে জন্য আমাদের ভাইয়েরা শহিদ হয়েছেন, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হবে।’