বাসস
  ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩১

নাটোরে হাফেজ ওমর ফারুকের বৈচিত্র্যময় খামার বাড়ি

নাটোরের শহরতলীতে হাফেজ ওমর ফারুকের আঙিনায় দেশি ও বিদেশি জাতের হাস-মুরগির পাশাপাশি দেখা পাওয়া যায় তোতাপুরী ছাগলের। ছবি: বাসস

রফিক বাবন

নাটোর, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : শহরতলীর চেয়ারম্যান রোডে নারদ নদের পাড়ে ওমর ফারুকের বাড়ি। বাড়ি তো নয় যেন খামার বাড়ি। বাড়িতে আছে ফ্রিজিয়ান গরু, তোতাপুরী ছাগল, দেশীয় ছাড়াও আছে চিনা হাঁস, রাজহাঁস, মুরগী ও কবুতর। খামার হয়েছে বৈচিত্র্যময়।

ওমর ফারুকের দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে, ভাই মালয়েশিয়া থাকে। তাই বাবা-মায়ের পরম চাওয়া, ওমর ফারুক যেন বাড়িতে থেকে কিছু একটা করে। আর তাইতো বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট নিয়েও দূরে কোথাও কোনো পেশায় নিয়োজিত হননি ফারুক। 

ওমর ফারুক রাজশাহীর দেওয়ানপাড়া মাদ্রাসা থেকে কোরআন মজিদ হেফজ করেছেন, তিনি হাফেজ। রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক থেকে ইলেকট্রিকে ডিপ্লোমা করেছেন, পরিকল্পনা করেছেন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। চট্রগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন। তবে তিনি বাড়ির পাশে একটা মসজিদে প্রতিবছর তারাবিহ নামাজে ইমামতি করেন।

বাড়িতে দেশীয় মুরগি আর হাঁসের সমারোহ। হাঁস-মুরগিসহ পরিবারে আছে চিনা হাঁস আর রাজহাঁস। রকমারি কবুতরে ভরপুর বাড়ির আঙিনা। একটি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে সামনের ঈদকে কেন্দ্র করে। ছয়টি ফ্রিজিয়ান গাভীর মধ্যে দুইটি দুধ দিচ্ছে প্রতিদিন ২০ লিটার। নির্ভেজাল এই দুধের চাহিদা এলাকা জুড়ে। ছাগলের খামারে এখন আছে দু’টো তোতাপুরী ছাগল আর দু’টো বাচ্চা। অত্যন্ত আকর্ষণীয় তোতাপুরীর একটার দাম উঠেছে ৫০ হাজার টাকা। দৃষ্টিনন্দন তোতাপুরী ছাগলগুলো এই আঙিনার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে অনেকগুণে। প্রায় দিনই ছাগল দেখতে আসেন অনেক দর্শনার্থী।

ওমর ফারুকের মা নার্গিস বেগম বলেন, চার ছেলে-মেয়ের কেউ কাছে নেই, তাই ওমর ফারুককে আমাদের কাছে রেখেছি। বাড়ির সবাই মিলে খামারের প্রাণিগুলোর পরিচর্যা করি। তাই কোন বেগ পেতে হয় না।

বাবা আলী আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, বাড়ির বড় আঙিনা আর পাশের নদী হাঁস-মুরগি পালনে সহায়ক হয়েছে। গরু-ছাগলের জন্যে নিজেদের জমি থেকে খড় পাওয়া যায়। তাই এসবের প্রতিপালন সহজ হয়েছে। 

ওমর ফারুক জানান, এই খামার থেকে তার মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ ও ঋণ দিয়েছে। তবে ঐ ঋণ শোধ করে দিয়েছি, এখন আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ। আরও পড়াশুনার ইচ্ছে আছে বলে খামারের পরিধি অনেক বড় করিনি। তবে আগামীতে খামার আরো বৈচিত্র্যময় করতে চাই।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক কে এম আব্দুল মতিন বলেন, ওমর ফারুক দেশের জাতীয় উৎপাদনে অবদান রাখছেন। তাঁর মত সফল উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে অনেক দূরে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উদ্যোক্তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে যাবে।