শিরোনাম
রংপুর, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস): রংপুরে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে একে ৭টি পরিবহণ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা না ঘটলেও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান রয়েছে। গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ।
এদিকে হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এসব পরিবহণ রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর গড়ের মাথা মোড়ে কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় চতুর্মুখী এ মোড়ে দুটি বাস, একটি ট্রাক ও পিকআপ এবং কাভার্ডভ্যান একে অপরকে ধাক্কা দেয়।
এতে কয়েকটি পরিবহনের সামনের গ্লাস ভেঙে গেছে এবং কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর জখম হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। একই সাথে ঘটনাস্থল থেকে পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন।
বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খুব বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। আহত কয়েকজন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত মহাসড়কের ওই এলাকার ওপর দিয়ে প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করে থাকে। ঘটনাস্থলে মাটি পড়ে সড়কটি ঘন কুয়াশায় পিচ্ছিল হয়েছিল। একই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে একে ধাক্কা দেয়।
মনিরুজ্জামান বাসস কে বলেন, রংপুর হাইওয়ে অঞ্চলের মহাসড়কে ঘন কুয়াশা থাকায় বেশ কিছু ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক জায়গায় দৃষ্টিসীমা অনেক কমে গেছে। গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চালক ও যাত্রী সাধারণকে ধীরে এবং সতর্কতার সাথে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জসহ জেলার কয়েকটি স্থানে পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিওয়নের সুপার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বাসস কে বলেন, ২০২৪ সালে রংপুরে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ১৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১২০, নারী ২২ ও শিশু ছিল চারজন। এসব দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৫২টি।
শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় সড়ক ও মহাসড়কে মৃত্যু ঝুঁকিসহ দুর্ঘটনা এড়াতে চলাচলের সময় গতি নিয়ন্ত্রণ ও ট্র্যাফিক আইন মেনে চলতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে শনিবার সকাল ১১:০০টা বাজলেও সূর্যের দেখা পায়নি রংপুরের মানুষ । তীব্র ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল রংপুরের নিম্ন আয়ের ও হতদরিদ্র মানুষগুলো।
রংপুরের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আজ সকাল ৯টায় রংপুরের তাপমাত্রা ছিল ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার তীব্রতা আরও দু-তিন দিন থাকতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল জানান, তীব্র শীতের কারণে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। রংপুর জেলায় হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ।