শিরোনাম
ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ব্রিটিশ সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক রাষ্ট্রদূত এলেনর স্যান্ডার্সের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বার্তা সংস্থা বাসস’কে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিএনপি’র পক্ষে এই বৈঠকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলীয় চেয়ারপার্সনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র বাসস’কে জানায়, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের শুরুতেই ব্রিটিশ সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক রাষ্ট্রদূত এলেনর স্যান্ডার্স জানতে চান গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী দলগুলোর ওপর কি ধরনের জুলুম নির্যাতন হয়েছিল।
এছাড়াও কোন প্রেক্ষাপটে ‘জুলাই-আগস্ট’র আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় তা জানার আগ্রহ প্রকাশ করে এলেনর স্যান্ডার্স ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেন বলেও সূত্র উল্লেখ করেন।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্রদূত এলেনর বৈঠকে জানতে চেয়েছেন, বর্তমানে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কি, সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা কোন পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে তার জিজ্ঞাসা ছিল, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক কতটুকু সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে চায়। নাকি সংস্কার এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সমানতালে চলবে।’
বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উল্লেখ করে সূত্র জানায়।
বৈঠকে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে দু’পক্ষের আলোচনায় সম্প্রতি কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোশাকধারী লোকরা বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে তাকে হত্যার প্রসঙ্গ উঠে আসে।
এই সময় বিএনপি’র নেতারা এলেনর স্যান্ডার্স’কে জানান, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে আগামীতে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
তিন দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় এসেছেন এলেনর স্যান্ডার্স। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার লক্ষ্যে এটি তার প্রথম ঢাকা সফর। তার সফরের বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে জানানো হয়েছে, ব্রিটিশ মানবাধিকার-বিষয়ক রাষ্ট্রদূত সফরকালে অন্তর্বর্তী সরকার, মানবাধিকার রক্ষাকারী সংগঠন এবং অন্যান্য অংশীদারের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এছাড়া রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবাধিকার-বিষয়ক একটি সেমিনারে অংশ নেবেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
সফরে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী-শিবিরে খাদ্য বিতরণ, মহিলা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রম, এলপিজি বিতরণসহ যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য কক্সবাজারে যাবেন বলেও ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন জানিয়েছে।