শিরোনাম
দিনাজপুর, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার বিরামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও চাষীদের আগ্রহে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাল্টা চাষের নীরব বিপ্লব ঘটেছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের ফল নিয়ে গবেষণায় নিয়োজিত সহকারী পরিচালক এটিএম রেজাউল ইসলাম সম্প্রতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চলতি বছর দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা মালটা চাষের উপযোগী উপজেলা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ উপজেলায় সৃজনকৃত ৬০টি মাল্টার বাগান ও কৃষকদের পতিত জমিতে লাগানো মালটার গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। মাল্টা চাষীদের লাভ দেখে অন্য কৃষকরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জেলার বিরামপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিক্সন চন্দ্র পাল গত ৫ বছর পূর্বে উপজেলার কৃষকদের উচ্চ মূল্যের ফল-ফসল আবাদে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। এ এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় তিনি কৃষকদের মালটা বাগান তৈরির প্রতি উৎসাহিত করেন। একই সঙ্গে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে মালটা চারা ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে কয়েক বছরের মধ্যে চাষীদের মাঝে প্রায় ৩০টি মাল্টা বাগান তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তাদের সাফল্য দেখে ব্যক্তি উদ্যোগে চাষীরা আরো ৩০টি বাগান তৈরি করেছেন। এছাড়া পতিত জমি ও বাড়ির ছাদে অনেকে মালটা চাষ করেছেন।
দিনাজপুর হর্টিকালচার বিভাগের হিসেব মতে গত ৫ বছর আগে উপজেলায় মালটার কোনো চাষ না হলেও বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৭২ একর জমির ওপর ৬০টি মালটা বাগান গড়ে উঠেছে।
বিরামপুর উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের পটুয়াকোল গ্রামের নূর ইসলাম মিঠু জানান, কৃষি বিভাগের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি গত ৪ বছর পূর্ব ২৫০টি মালটা গাছ রোপণ করে ছিলেন। চারা রোপণের দু’বছর পর ফল ধরতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতিটি গাছে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ কেজি হারে মালটা ধরেছে। অন্য বাগানগুলোতে এবার মালটার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগান থেকে বিভিন্ন এলাকার ফল ব্যবসায়ীরা সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ দরে মাল্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মালটা চাষী মিঠু জানান, পরিচর্যা খরচ বাদে মালটা বাগান থেকে তিনি এবার ১০/১২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
এলাকায় মাল্টা চাষের স্বপ্নদ্রষ্টা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিক্সন চন্দ্র পাল জানান, বিরামপুর উপজেলায় তার হাতেই মালটা চাষের সূচনা হয়েছে। বর্তমানে চাষীরা ব্যাপক হারে মালটার চাষ করছেন। এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার মাল্টা অধিক সুস্বাদু এবং আকারে বড় হচ্ছে। চাষীদের অধিক লাভ ও সাফল্য দেখে কৃষকরা নতুন নতুন বাগান তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষকদের সার্বিক সহায়তার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ।