বাসস
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:০২

দেশে যেকোনো মূল্যে সংস্কার জরুরি: ফরিদা আখতার

রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রম-সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: বাসস

সিলেট, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বলেছেন। কিন্তু দেশে যেকোনো মূল্যে সংস্কার জরুরি। 

তিনি আরো বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কার শেষ না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সবাই একমত হলে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে, কোনোভাবে এই সময়ের বাইরে যাবে না।

তিনি আজ রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রম-সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘তরুণদের ত্যাগের বিনিময়ে বড় ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সবকিছু তো পরিবর্তন হয়নি। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা অনেকেই এখন সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন। এ কারণেই দেশে নানা রকমের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’

আইনশৃংখলার এই পরিস্থিতি সাময়িক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। অচিরেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমরা দেশকে সংস্কার করে, দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টায় আছি। যারা ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করছেন তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই করছেন। উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সবকিছু ঘোলাটে করছেন। তাই ঘটনাগুলো ঘটছে।’

সভায় অংশগ্রহণের আগে মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বাইক্কা বিলের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

মতবিনিময় সভায় ফরিদা আখতার বলেন, ‘এখানে এসে একটা কথা শুনে কষ্ট লাগল, হাওরে নেট (জাল) দিয়ে মাছের আসা-যাওয়া বন্ধ করা হয়। আপনারা মাছকে বাইক্কা বিল থেকে যেতে দিচ্ছেন না, ফিরতে দিচ্ছেন না; এটা অন্যায়। বাইক্কা বিলে সবধরনের নেটের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বাইক্কা বিলে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হবে।’

বাইক্কা বিলকে মাছের বীজতলা উল্লেখ করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে বাইক্কা বিলে যে পানি থাকে, সেখানে মাছের প্রজনন ঘটে। বর্ষায় সেই মাছ বাইক্কা বিল হয়ে ১৩২টি বিলে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় মৎসজীবীরা বিলে মাছ শিকার করে জীবিকানির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের কারণে যত্রতত্র বাঁধ ও জালের ব্যবহার বিলের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহে ব্যাঘাত ঘটছে। বিলের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবী ছাড়া কাউকে ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হবে না।’

মতবিনিময় সভায় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুর রউফ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হবীর, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসলাম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।