শিরোনাম
ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, মুদ্রাস্ফীতির কাঙ্ক্ষিত স্তর অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংকোচনমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আশা করছি চলতি বছরের জুনের মধ্যে সাধারণ মুদ্রাস্ফীতির হার ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে। যদিও বর্তমানে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারী-জুন) মুদ্রানীতি বিবৃতিতে (এমপিএস) কঠোর মনোভাব অব্যাহত রাখবে। এর ফলে আশা করা হচ্ছে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের (২৬ অর্থবছর) মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে।’
আজ সোমবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন, ২০২৫) মুদ্রানীতি (মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট-এমপিএস) ঘোষণার সময় এসব কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, চলতি অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশ নামানোর লক্ষ্য ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের মতো রাখা হয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮ শতাংশ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মুদ্রাস্ফীতি এবং নিকট-মেয়াদী মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনার ওপর বিশেষভাবে বিশ্লেষণ এবং বর্তমান ও বিকশিত ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পর, এমপিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে: নীতিগত হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে। আর স্থায়ী ঋণ সুবিধা (এসএলএফ) হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ থাকবে, যেখানে স্থায়ী আমানত সুবিধা (এসডিএফ) হার থাকবে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
গভর্নর বলেন, এমপিএসের মূল লক্ষ্য হলো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল করা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে দ্রুত ক্রমবর্ধমান অনাদায়ি ঋণ মোকাবেলা করা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টের অবস্থা ভালো । এছাড়া রমজান উপলক্ষ্যে পণ্য আমদানির এলসি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে; ব্যুরো মৌসুমের সার কেনাকাটাও প্রায় শেষ এবং সামনে হজ্জ মৌসুমের টাকাও ইতোমধ্যে পে করা হয়েছে। কাজেই আমাদের সিজনাল যে ডলার চাহিদা থাকে সেটা কমে এসেছে। সামনে শুধু আমাদের জ্বালানির জন্য ডলারের চাহিদা থাকবে । তবে এজন্য আমাদের খুব চাপে থাকতে হবে না।’
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আইএমএফের অর্থ পাইনি। তারপরেও আমাদের রিজার্ভ বাড়ছে। কাজেই আমাদের রিজার্ভের তেমন সংকট হবে না। মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসলে পলিসি রেট তখন ১০ শতাংশ থেকে নামিয়ে আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল রাখতে হবে। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি, যাতে এক্সেঞ্জ রেট স্থিতিশীল থাকে। এ প্রচেষ্টা সফল হয়েছে, ডলারের বাজার স্থিতিশীল হওয়ার কারণে ইতোমধ্যে আমদানি পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে।
গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার স্পট রেফারেন্স এক্সচেঞ্জ রেট জানার জন্য প্রতিদিন দুইবার খোঁজ খবর নেয়া হয়। এতে দেখা যায় সকাল বিকাল কিছুটা পরিবর্তন হয়। আমরা বলেছি এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল অবস্থায় চাই। এ অবস্থায় বর্তমান বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা রেমিট্যান্স প্রবাহকে শক্তিশালী করবে, রপ্তানি কার্যক্রমকে উদ্দীপিত করবে।
যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’