বাসস
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:৫৬

নোভার্টিসের শেয়ার হস্তান্তরের তদন্ত চেয়ে আনা রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ

ফাইল ছবি

ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তর সংক্রান্ত রিট মামলা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি মো. খায়রুল আলম এবং বিচারপতি কে. এম. ইমরুল কায়েশ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইকতান্দার হোসাইন হাওলাদার বাসস’কে জানান, আজ রিট আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ছিল। এক পর্যায়ে আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এখন এখতিয়ারাধীন অন্য কোনো বেঞ্চে শুনানির জন্য মেনশন করা হবে বলে রিট পিটিশনার জানান।

অ্যাডভোকেট ইকতান্দার হোসাইন হাওলাদার বলেছেন, শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচার রোধকল্পে নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার হস্তান্তর স্থগিত চেয়ে আনা রিট শুনানি গত ২৬ জানুয়ারি মুলতবি রাখা হয়। ওইদিন শুনানিতে দুদক আদালতকে জানায় নোভার্টিস বাংলাদেশ ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার হস্তান্তর বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে শুনানি এক মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) রেখে আদেশ দিয়েছিলেন।

রিটে অর্থ সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, শিল্প সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কর্তৃক নোভার্টিসের শেয়ার অধিগ্রহণে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে রিট আবেদনকারী নোভার্টিসের ২শ’৩০ কোটি টাকার শেয়ার হস্তান্তর প্রতিরোধে ৮ জানুয়ারি সংশ্লিষ্টদের বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ২৩০ কোটি টাকার প্রায় ১০ লাখ শেয়ার রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ সংশ্লিষ্টদের ওই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। এই শেয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি খাত ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। নোটিশে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি নোভার্টিস বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ শেয়ার অর্থাৎ ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬ শেয়ার বিক্রির চেষ্টা চলছে। শেয়ারগুলো ২৩০ কোটি টাকায় রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে বিক্রয়ের প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। ইতোপূর্বে ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়াটি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের কর্ণধার শেখ হাসিনা সরকারের বৈদেশিক বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পরিবর্তিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিন্তু অপেক্ষাকৃতভাবে কম পরিচিত রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি চলমান রয়েছে। সালমান এফ রহমানের অবর্তমানে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বর্তমানে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ব্যবসায়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় দেখভাল করছেন।

নোটিশে আরো বলা হয়, শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার মূল্য বিবেচনায় না নিয়ে গোপন চুক্তির ভিত্তিতে অতিরিক্ত বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এমতাবস্থায় প্রকৃত বাজার মূল্যে ব্যতিরেকে অনাবাসী শেয়ার ধারকদের অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ থেকে চলে যাবে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ। রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং আলোচ্য অনাবাসী শেয়ার ধারকের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ারের অতিরিক্ত মূল্য প্রদর্শন করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করার চেষ্টা করছেন।

নোটিশে আরো বলা হয়, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি পতিত স্বৈরাচার সরকারের সর্বশেষ একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নোটিশে বলা হয়, আলোচ্য শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় শেয়ারের প্রকৃত বাজার মূল্য অপেক্ষা, অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।