বাসস
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫৯
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:২১

নওগাঁয় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক।ছবি : বাসস

নওগাঁ, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন নওগাঁর বরেন্দ্র জনপদের চাষীরা । যেখানে সরিষার ব্যাপক ফলনের হাতছানি দিচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। সরিষার ভালো পাওয়ার আশা কৃষকদের।

কৃষকরা জানান, সরিষা আবাদে খরচ ও পরিশ্রম কম। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে হাল চাষ, শ্রমিক, পানি সেচ, সার ও কীটনাশকসহ আনুষঙ্গিক খরচ পড়ে ৫-৬ হাজার টাকা। যেখানে ফলন হয় ৬-৭ মণ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশা চাষীদের। বাজারে তেলের দাম বেশি, তাই এবার সরিষার ভালো দাম পাওয়ার আশা তাদের। এছাড়া একই জমিতে বোরো আবাদ করায় খরচও কম হয়। এতে লাভবান হবেন তারা। দাম কম পাওয়ায় ভোজ্যতেল হিসেবে অনেকে সয়াবিন খেতে অভ্যস্ত। তবে ভোজ্যতেলে সরিষা বাড়ানো গেলে চাহিদা পূরণ হবে তেমিন উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন কৃষকরা।

পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর গ্রামের কৃষক সালেমামুন বলেন, গত বছর ৭ বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের সরিষার আবাদ করেছিলাম। বিঘাতে ফলন হয়েছিল ৬ মণ করে। যেখানে সরিষা বিক্রি করে পেয়েছিলাম প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তবে সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে বোরো আবাদ করায় পকেট থেকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়নি। পাশাপাশি ভোজ তেলের চাহিদাও পূরণ হয়েছে। এ বছরও একই পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এ বছর সরিষার দাম আরো ভালো বিশেষ করে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রির আশা।

মান্দার বিলকরিল্যা গ্রামের কৃষক রশিদুল ইসলাম বলেন, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। তবে সরিষা ভোজ্যতেল হিসেবে তেমন একটা ব্যবহার না করে বিক্রি করে দেয়া হয়। দাম কম পাওয়ায় ভোজ্যতেল হিসেবে সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়। সরিষার চাষাবাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এবং ভোজ্যতেলের ব্যবহার বাড়ানো দরকার। এতে সরিষার ভালো দাম পাওয়া যাবে এবং ভোজ্যতেল শরীরের জন্য উপকারে আসবে।

নওগাঁ জিলানী অয়েল মিলের মালিক আব্দুল কাদের শাহ বলেন, নওগাঁ শহরের বিসিক শিল্প নগরীতে কারখানা। এ কারখানায় প্রতিদিন প্রায় ১০ টন সরিষার তেল উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে দেশে যে পরিমাণ সরিষার আবাদ হয় তা দিয়ে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। চাহিদা পূরণে আমদানি করতে হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাসস’কে বলেন, শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সরিষার ভোজ্যতেল অনেক উপকারি এবং পুষ্টিসম্মত। তবে মাঝের সময়ে সয়াবিন তেল বাজার দখলে রেখেছিল। বর্তমানে সরিষার ভোজ্যতেলের ব্যবহার বাড়ছে। এর ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাওয়া প্রয়োজন। সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পেলে ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এজন্য ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণেএবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের বারি ৭ ও ১৪ এবং বিনা ৪ ও ৫ সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা থেকে ৯৯ হাজার ৬৫ টন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৭৪৩ কোটি টাকার ওপর।