বাসস
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫৬

চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে দুদকের অভিযান

চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে দুদকের অভিযান। ছবি: দুদক

চট্টগ্রাম, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম ওয়াসায় স্যুয়ারেজ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ সরেজমিনে দেখতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অভিযান চালায় দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সাইদ মোহাম্মদ ইমরান। এ সময় দুদকের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ওয়াসা সচিব ও স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ওয়াসা পরিদর্শনের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদক কর্মকর্তা সাইদ মোহাম্মদ ইমরান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, হালিশহরে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখানে নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে অনিয়ম অর্থাৎ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে- এ ধরনের অভিযোগ ছিল। আমরা সরেজমিনে আজ সকালে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে অনেকগুলো ফাটল দেখতে পেয়েছি। এই ফাটল দেখার পরে এখানে এসেছি এবং প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। প্ল্যান্টে ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছি।

প্রকল্প পরিচালক এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাকে জানান, তিনি প্রকল্পের কনসাল্টেড ফার্মের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ফাটল সিল করার জন্য যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হবে সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, এখনো রিপোর্ট পাননি। রিপোর্টে রাসায়নিকের মান যথাযথ পাওয়া গেলে ফাটলগুলো সিল করা হবে।’

নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক কর্মকর্তা সাইদ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘এটি খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই। এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞরা বলতে পারবেন। তবে ফাটল দেখা গিয়েছে। এটি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে অথবা পারিপার্শ্বিক কারণেও হতে পারে।’

ওয়াসার সাবেক এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে ফাইল গায়েবের অভিযোগ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাবেক এমডি দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। বিশেষ করে ২০২০ সালে ওয়াসা ভবনের তৃতীয় তলায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সাজানো ছিল- এমন অভিযোগ এসেছে। যেখানে অনেকগুলো নথি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গায়েব করা হয়েছে বলা হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি এ বিষয়ে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির একটি তদন্ত প্রতিবেদন আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। এটি আমরা বিস্তারিত স্টাডি করে বলতে পারবো।’

অভিযোগ আছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার আলোচিত সাবেক এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহর সঙ্গে বিগত সরকারের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের নানাভাবে কাজে লাগিয়ে তিনি বছরের পর বছর এই পদে ছিলেন। এ ছাড়া ওয়াসা বোর্ডও তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। তার আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অন্তত ১০টি প্রকল্প নেওয়া হয়। আটটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। দু’টি বড় প্রকল্পের কাজ এখনো চলছে। শেষ হওয়া আট প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। আর চলমান দুই প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। একের পর এক প্রকল্প নিলেও নগরে পানির সংকট কাটেনি। প্রকল্পের সুফল নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।