বাসস
  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:২১

আবু সাঈদ জীবন দিয়ে বাঙালির হৃদয় থেকে ভয় দূর করে দিয়েছেন: মাহমুদুর রহমান

শনিবার রংপুরে শহীদ আবু সাঈদ বইমেলায় বক্তব্য দেন মাহমুদুর রহমান। ছবি : বাসস

রংপুর, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : একুশে পদক প্রাপ্ত সাহসী সাংবাদিক এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, শহীদ আবু সাঈদ তার জীবন দিয়ে বাঙালির হৃদয় থেকে ভয় দূর করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন ‘২০২৪ সালের ১৬ জুলাই নিজের জীবন উৎসর্গ করে আবু সাঈদ কেবল বাংলাদেশেই নয়, সমগ্র বিশ্বে বিপ্লবের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনি তার জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করেছেন।’

ড. রহমান আজ শনিবার বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর (বেরোবি)’র স্বাধীনতা স্মৃতি চত্বরে আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী শহীদ আবু সাঈদ বইমেলার সমাপনী দিনের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সকল বিপ্লবে ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি দৃঢ আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিপ্লবের অনুপ্রেরণা হিসেবে, পরবর্তী প্রজন্ম 'চে গুয়েভারা' নয়, শহীদ আবু সাঈদের ছবি সম্বলিত শার্ট পরবে।’

রহমান বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগ তখনই সার্থক হবে যখন আমরা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বৈষম্যমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।’

তিনি জুলাই বিপ্লব এবং আবু সাঈদসহ সকল শহীদের ওপর গবেষণা পরিচালনার উদ্যোগ নিতে বেরোবি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আবু সাঈদ ১৬ জুলাই পুলিশ এবং খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে রাস্তায় নামিয়ে আনেন এবং ছাত্ররা আন্দোলনে যোগ দেন। ছাত্রদের কাছে পরাজিত হয়ে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা ৩৬ দিনের মধ্যে জুলাই বিপ্লবকে বিভিন্ন বাঁক পেরিয়ে এগিয়ে যেতে দেখেছি। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন আবু সাঈদ। ১৬ জুলাই আবু সাঈদ পুলিশের সামনে দুটি হাত উঁচু করে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।’

ভবিষ্যতের বাংলাদেশে কোনও বৈষম্য থাকবে না এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার থাকবে বলে দুঢ়ভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন  ডক্টর মাহমুদুর রহমান।

বেরোবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক শওকত আলী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  গত বছর জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। 

তিনি বলেন , ‘আবু সাঈদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। শহীদ আবু সাঈদ দেখিয়ে গেছেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালযয়ে অন্যায়ের কোনও স্থান নেই। বর্তমান প্রশাসন এখানে সকল বৈষম্য দূর করার জন্য কাজ করছে।’

একই সাথে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন এবং শহীদ আবু সাঈদের ওপর বৃহৎ পরিসরে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানান।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্টেডফাস্ট কুরিযয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কেএম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন।

শহীদ আবু সাঈদ বইমেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস প্রামাণিক আলোচনা সঞ্চালনা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা শেষে, উপাচার্য আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে নিয়ে শহীদ আবু সাঈদ বইমেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো পাঁচ দিনের এই বইমেলা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়।