শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া সারা দেশের সকল উপজেলায় আগামী দুই বছরের মধ্যে (২০২৬ সালের মধ্যে) পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালত স্থাপন করার সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
গত ১৮ নভেম্বর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি প্রজ্ঞাপনে প্রফেসর তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠিত হয়।
কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু কাজ পরিপূর্ণভাবে শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে, তাই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন শেষ করতে আরও কিছু সময় প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে সরকার ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সংস্কার বিষয়ে আলোচনা করছে। তাই স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন আলোচনা ও ঐকমত্যে উপনীত হবার প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য এ কমিশনের তৈরিকৃত প্রাথমিক কিছু মৌলিক সুপারিশ এখনই সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার জন্য উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। প্রাথমিক সুপারিশের সাথে আরও দুইটি অধ্যায় বিশেষত সারা দেশে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর মাধ্যমে ৪৬৬৮০ জন উত্তরদাতার মধ্যে পরিচালিত মতামত জরিপ এবং নির্বাচন বিষয়ক একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে।’
স্থানীয় বিচার ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালতের পাশাপাশি একই পদমর্যাদায় প্রতিটি উপজেলায় ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’ (এডিআর)-এর জন্য একজন সিনিয়র সহকারী জজ এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় স্থাপন করা। ইউনিয়ন পরিষদের অধীন ‘গ্রাম আদালত’ বিলুপ্ত করে ওয়ার্ড পর্যায়ে সালিশি ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দান এবং সালিশ সমূহের তত্ত্বাবধান, সালিশকারদের প্রশিক্ষণ ও সালিশের আপিল শুনানীর জন্য এডিআর আদালতের বিচারকের এখতিয়ার ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
সুপারিশে আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতি উপজেলায় না হলেও প্রতিটি জেলায় অন্তত: তিনটি এডিআর পরিচালনার উপযোগী কাঠামো সৃষ্টি এবং এডিআর ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে হেডম্যান-কারবারী ও ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড/গ্রাম ভিত্তিক সালিশের সংযোগ স্থাপন।
সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠি অধ্যুষিত উপজেলাসমূহের এডিআর ম্যাজিস্ট্রেটের সালিশ তত্ত্বাবধান ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কমিউনিটি নেতৃত্ব পর্যন্ত তদারকি ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। জেলা নয়, উপজেলাই হবে দেশের স্বীকৃত নিম্ন আদালত এবং জেলা হবে মধ্যবর্তী আদালত। জেলা জজ হবেন জেলা ও উপজেলা আদালতসমূহের তত্ত্বাবধায়ক।
উপজেলা পর্যায়ের বার এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা ও উপজেলা বারের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য জাতীয় বার কাউন্সিল উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।