শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : আজ লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের আয়োজনে এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতায় ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন : প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সভা রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া। সভাপতিত্ব করেন লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) এস এম সাফায়েত হোসেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার আব্দুল হালিমসহ আরো অনেকে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) এস এম সাফায়েত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, মানবাধিকার কমিশনের কমিটিতে আমলাতন্ত্রের প্রাধান্য বর্জন করতে হবে। অবশ্যই অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা থাকবেন কিন্তু তাদের আধিপত্য থাকা যাবে না।
ড. মাহদী আমিন তার বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছরে যে বাংলাদেশ আমরা দেখেছিলাম সেখানে আসলে মানবাধিকার বলতে কোন কিছু ছিল না, কারণ ম্যান্ডেট ছাড়া যে সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে সে ক্ষমতা ধরে রাখার অর্থ হলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। মতের বিভেদ থাকা সত্ত্বেও যদি মানবাধিকার প্রশ্নে আমরা এক থাকতে পারি তাহলে তা গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের এক থাকাকে বোঝাবে। জনগণের ক্ষমতায়ন হলে সুরক্ষিত হবে মানবাধিকার।
বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহিতার লক্ষ্যে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সম্পূর্ণ তথ্য উন্মোচন করতে হবে। সম্পূর্ণ ক্ষমতা না দিলে আন্তর্জাতিক শিক্ষিত একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কোন মর্যাদা রক্ষিত হবে না।
সভায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্যে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি বিধিমালা তৈরির উপর জোর দেন। কমিশনের বিধিমালা তৈরিতে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলার সুপারিশ করেন তিনি।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মো. সাব্বির হোসেন, যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ, মো. মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী সচিব (উন্নয়ন), ফারুক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিন রেমা, জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ আরো অনেকে।
এছাড়াও উপস্থিত সকল বক্তা পুনরায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনগণের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়ার জন্য বাছাই কমিটিতে নাগরিক অংশগ্রহণ, বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতার মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিরূপণ, দলিত ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের কমিটির সর্বস্তরে অন্তর্ভুক্তি, মানবাধিকার কমিশনের বিকেন্দ্রীকরণ, বেতনভুক্ত পূর্ণকালীন অস্থায়ী সদস্য নিয়োগ ও কমিশনের কর্ম পরিকল্পনার তথ্য উন্মোচন ও কমিশনের কাজের নির্দিষ্ট মেয়াদ নিরূপণসহ বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করেন।
পরিশেষে বক্তারা বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষিত হলেই জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে। সুতরাং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিধিমালা প্রস্তুতকরণ ও মানবাধিকারের সংজ্ঞাসহ আইনের প্রয়োজনীয় ধারা সংশোধন করে কোন ধরনের বিলম্ব ছাড়াই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নতুন ভাবে কাজ করতে হবে।