বাসস
  ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৭

মৎস্য খাতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল ইউনিট প্রতি চার টাকা নির্ধারণের কাজ শুরু

শুক্রবার নাটোরে মৎস্য চাষিদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। ছবি: বাসস

নাটোর, ১ মার্চ ২০২৫ (বাসস) : মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ বলেছেন, মৎস্য খাতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল ইউনিট প্রতি ১৪ টাকা থেকে কমিয়ে চার টাকা নির্ধারণ করা হবে। 

তিনি বলেন, ‘মৎস্য খাতে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল ১৪ টাকা থেকে কমিয়ে কৃষি খাতের মত ইউনিট প্রতি চার টাকা নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে সরকার। মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে দ্রুত তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হবে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে মৎস্য চাষিদের প্রাণের এই দাবি পূরণ হবে।’ 

জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-পাথুরিয়া বাজারে মৎস্য চাষি কল্যাণ সমিতি আয়োজিত মৎস্য চাষিদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের মৎস্য চাষিদের অংশগ্রহণে গতকাল নাটোরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

মহাপরিচালক বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন মৎস্য চাষিবৃন্দ। কার্প জাতীয় মাছ উৎপাদনে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মহারাজপুর সারাদেশে অগ্রগামী এবং অনুকরণীয়। অতি দ্রুত এই এলাকার মৎস্য চাষিদের স্বার্থে একটি ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের কার্যক্রম চালু করা হবে। পুকুর সংস্কারে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং গুণগতমানসম্পন্ন মৎস্য খাদ্য নিশ্চিতকরণে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হবে।

তিনি বলেন, দেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও মাছ রপ্তানি হচ্ছে। গত বছর ৪৯.১৫ লক্ষ টন মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৯শ’ ৭০ কোটি টাকার মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। ক্রমবর্ধমান উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দেশে জনপ্রতি ৬০ গ্রাম মাছের চাহিদার বিপরীতে আমরা ৬৭ গ্রাম মাছ গ্রহণ করতে পারছি। অর্থাৎ প্রতিদিন সাত গ্রাম করে অতিরিক্ত মাছ গ্রহণ করতে পারছি। নিরাপদ মাছ গ্রহণ করে আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। গড়ে উঠছে বুদ্ধিদীপ্ত জাতি।

মৎস্য চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুস সালাম মিয়া’র সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাটোরের পুলিশ সুপার মোঃ আমজাদ হুসাইন, মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ড. এস এম রেজাউল করিম, উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) শাহেদ আলী, রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুল ইসলাম, মৎস্য চাষি রাকিবির রহমান, আব্দুল্লাহ আল কাফী, শফিকুল ইসলাম, মোঃ তবারকউল্লাহ এবং জাকির হোসেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, নাটোর জেলা থেকে প্রতি বছর স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ৩৭ হাজার টন উদ্বৃত্ত মৎস্য রাজধানীসহ দেশের ঘাটতি এলাকায় পাঠানো হয়। 

মৎস্য চাষিরা তাদের বক্তব্যে পুকুর সংস্কারে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধ, মৎস্য ক্ষেত্রে শিল্পের পরিবর্তে কৃষি শ্রেণীতে বিদ্যুৎ বিল প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, ভ্রাম্যমাণ মৎস্য পরীক্ষাগার ব্যবস্থা চালু, মৎস্য হিমাগার স্থাপন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম চালু এবং বাজারে গুণগতমানের মৎস্য খাদ্য নিশ্চিত করার দাবি উপস্থাপন করেন।