বাসস
  ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৬:৫০

নওগাঁয় দীর্ঘ চার বছরেও শেষ হয়নি পারঘাটি সেতু নির্মাণের কাজ 

নওগাঁর পোরশায় র্দীঘ চার বছরেও শেষ হয়নি ৭২ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতুর নির্মাণ কাজ। ছবি: বাসস

নওগাঁ, ৩ মার্চ ২০২৫ (বাসস) : নওগাঁর পোরশায় র্দীঘ চার বছরেও শেষ হয়নি ৭২ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতুর নির্মাণের কাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের এমন ধীরগতিতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আর এতে করে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। 

পোরশা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিতপুর ইউপির পূনর্ভবা নদীর পারঘাটি নামক স্থানে ৭২ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণ করতে ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা চুক্তিতে মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড ও মেসার্স কেয়া বেকারী এ্যান্ড কনফেকশনারী নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

তাদের অভিযোগ, সেতুটির নির্মাণ কাজ প্রথম থেকেই ধীর গতিতে চলছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক সংকটের কারণে কাজ চলছে ধীরগতিতে। অল্প কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে কাজ চলছে। শ্রমিক সংখ্যা বেশি থাকলে কাজের গতি ঠিক থাকে।

২০২১ সালের পহেলা এপ্রিল চুক্তির এক সপ্তাহ পর ৮ এপ্রিল কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুটি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুটির সাথে দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার চুক্তি থাকলেও কাজ শেষ করতে পারেনি দীর্ঘ চার বছরেও। নির্ধারিত সময় পার হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজের বাড়তি সময়ের আবেদন করলে তাও দেওয়া হয়েছে তাদের।

উপজেলার নিতপুর সদরের সিদ্দিক আলী, দিয়াড়াপাড়ার তবিবুর রহমান ও টুটুল জানান, নদীর ওপারে তাদের জমি রয়েছে। নদীতে সাঁতার কেটে তাদের জমিতে যেতে হয়। ফসল ঘরে তুলতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নদীর ওপারে এই এলাকার বহু মানুষের কয়েক হাজার বিঘা জমি রয়েছে। সবাইকে একই কষ্ট পোহাতে হয়। বহু কাংখিত এই পারঘাটি নদীর উপর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়াতে আমরা বেশ খুশি হয়েছিলাম। দেড় বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু চার বছরেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা চিন্তিত। যে গতিতে কাজ চলছে তাতে কত দিনে শেষ হবে তা তারাই ভালো জানে। আমাদের তো মনে হয় না যে ৫ বছরেও এই সেতুর কাজ শেষ হবে।

এ বিষয়ে জানতে কথা বলা হয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সাদেকুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, বিভিন্ন সমস্যার কারণে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারিনি। পরে সময় বাড়িয়ে নিয়েছি। তবে চলতি বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে দাবী তার।

পোরশা উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতানুর রহমান দাবী করেন বলেন, ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর কাজ সচল রয়েছে। যদিও যথা সময়ে সেতুটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতার কারনে তা সম্ভব না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময় বাড়তি চেয়ে আবেদন করেছিল। তাদেরকে সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহম্মেদ জানান, ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা চুক্তি হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে। এর মধ্যে তারা এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা নিয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।