বাসস
  ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫৭

কিশোরগঞ্জের কালনী নদীতে বালু উত্তোলন, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

কিশোরগঞ্জ জেলার কালনী নদীতে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। ছবি: বাসস

কিশোরগঞ্জ, ৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : জেলার কালনী নদীতে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। ফলে নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চান এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের দোয়েলপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত কালনী নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। যার ফলে নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত একরেরও বেশি ফসলি জমি ও বাড়িঘর। দীর্ঘ সময় ধরে নদীভাঙনের সঙ্গে লড়ছে দোয়েলপুরের ৪৩টি পরিবার। দুই শতাধিক মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। এরইমধ্যে কাদির মিয়া ও আলাল মিয়াসহ দুই পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। নদী পাড়ে বসবাসরত  অন্যপরিবারের লোকজনও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালু উত্তোলনে বাধা দিলে রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে দেওয়া হচ্ছে হুমকি-ধমকি। দিনের পর দিন প্রশাসনের চোখের সামনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষিজমি ও বসতভিটা। 

নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে ১০০ একরেরও বেশি ফসলি জমি চলে গেছে নদীগর্ভে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষজন। তাদের দাবি কালনী নদী রক্ষায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন জব্দসহ দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

মুঠোফোনে কথা হয় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এলাকা  ছাড়া কাদির মিয়ার স্ত্রী লাল মতির সঙ্গে তিনি জানান, নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের শিকার হয়ে বাড়ি-ঘড় হারিয়েছেন তারা। বর্তমানে অন্য এলাকায় জায়গা ভাড়া করে ঘর তুলে বসতি করে পরিবার নিয়ে থাকন তারা।

মাজেদা খাতুন নামে এক নারী জানান, সবার চোখের সামনে যেভাবে নদী থেকে বালু-মাটি উত্তোলন হচ্ছে এখন আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না, কখন যানি পাড় ভেঙে আমাদের বাড়ি নদীর পেটে চলে যায়। আমাদের কথা কেউ শুনে না। বাধা দিলে বলে অনেক টাকা দিয়ে অনুমতি নিয়ে এসেছি আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। আমরা গরীব মানুষ আমাদের কথা কে শুনবে।

এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগকারী লিফাই মিয়া জানান, অনেক দিন হলো লিখিত অভিযোগ করে এসছি। কিন্তু কোনো ফলাফল হচ্ছে না। 

বালুমহল ও মাটি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান।