শিরোনাম
লালমনিরহাট, ৫ মার্চ ,২০২৫(বাসস): রমজানে ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাহারি খাবারের পসরা সাজিয়ে বসছেন জেলার ব্যবসায়ীরা।
রমজানের চতুর্থ দিনে আরো বেশি জমে উঠেছে ইফতারির দোকানগুলো। প্রতিদিনই বিকেল থেকে ইফতারের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।
জেলা সদরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড়ে জমে উঠেছে শহরের মিশন মোড় চত্বরে। নামি-দামি রেস্টুরেন্ট-হোটেলগুলো ইফতার বিক্রির জন্য অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে। বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইফতার তৈরির কারিগরেরাও। শহরের সীমান্ত ক্যান্টিন মোড়, স্বর্ণকার পট্টি বাটা মোড়, বিডিআর গেট, স্টেডিয়াম রোড, টেকনিক্যাল স্কুল রোড, পুলিশ লাইনন্স রোডসহ বেশ কিছু পয়েন্ট এখন ব্যস্ত দোকানদাররা ইফতার বিক্রি নিয়ে। এবার প্রথম রমজানেই জমে উঠেছে লালমনিরহাটের ইফতার বাজার।
আজ বুধবার জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় রাস্তার পাশেই ভ্রাম্যমাণ ইফতারের দোকান বসানো হয়েছে।
দুপুর থেকে এই স্থানগুলোতে দোকানিরা ইফতারের জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার কেনার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করতে থাকে। ক্রেতাদের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের আইটেম কিনতে দেখা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে তৈরি করা হয়েছে নানান সুপরিচিত ঐতিহ্যবাহী খাবার।
ভ্রাম্যমান দোকানগুলোতে ইফতারের খাবার হিসেবে দেখা মিলেছে হালিম সহ মোটা মোটা জিলাপি, বুট, বুন্দিয়া, পায়েস, ধনিয়া পাতার চপ, গুরের চিকন জিলাপি, বাদাম, ভাজা চিরা, বিরিয়ানি, চিকেন, পরোটা, চিকেন লেগ, চিকেন তন্দুরি, চিকেন কারি, গরু কারি, আস্ত মুরগির গ্রিল, ছোট মুরগি, বড় মুরগি, কাবাব, টিকা কাবাব, ডিম চপ, রোস্ট, লাচ্ছি, ছোলা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ফালুদাসহ নানা আইটেম।
নির্ধারিত ইফতারের দাম হচ্ছে, প্রতি কেজি হালিম ২০০ টাকা, ছানার পোলাও ২৬০ টাকা, জিলাপি ২২০ টাকা, নিমক পারা ২৪০ টাকা কেজি, শাহী জিলাপী ২০০ টাকা কেজি, তেহেরি হাফ ১২০ টাকা, বোরহানী ১০০/২০০ টাকা, ব্রেড ক্রাম চিকেন ১০০ টাকা পিস, চিকেন সাসলিক ৭০ টাকা পিস, চিকেন কাঠি কাবাব ৬০ টাকা পিস, চিকেন বডি কাবাব ৬০ টাকা পিস, চিকেন চাপ ১১০ টাকা পিস, ললিপপ ৩০ টাকা পিস, গ্রিল কোয়াটার ১৩০ টাকা, নান রুটি ৩০ টাকা পিস, টক দই ১ কেজি ১৯০ টাকা, মিষ্টি দই ১ কেজি ২৬০ টাকা,ছোলা ২০০ টাকা, বুন্দিয়া ২২০, প্রতি পিচ পেঁয়াজু ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর চপ ৫ টাকা, বেগুনী ৫ টাকা, ডিম চপ ১০, ধনে পাতা চপ ১০ টাকা পিস।
সাগাইবাড়ি রেস্টুরেন্টের প্রধান ম্যানেজার মাহাবুব আলম সুমন বাসস'কে বলেন, বর্তমান সময়ে কিছুটা ইফতার সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই চাহিদা অনুযায়ী কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
মহাবুল হোসেন নামের এক ইফতার বিক্রেতা বলেন, এবার শুরুতেই রমজানে ভালো বিক্রি হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। মানুষ আগ্রহ নিয়ে বিভিন্ন আইটেমের ইফতার সামগ্রী নিচ্ছেন। দুপুরে ক্রেতা কম থাকলেও বিকেলে প্রচুর ক্রেতা এসেছে। অনেকে জিলাপি না পেয়ে ফেরত চলে গেছে।
ইফতার সামগ্রী কিনতে আসা জয়নাল আবেদীন বলেন, বাসায় ইফতার বানানো হয়েছে, কাবাব ও জিলাপি কিনতে এসেছি। বাচ্চারা এগুলো খেতে পছন্দ করে। প্রতি বছরই বাজারে ইফতার কিনতে আসি, সেই ধারাবাহিকতায় আজও আসলাম । আমার পরিবারে মা, ভাই-বোনসহ সবাইকে ইফতার করাতে হবে। কিন্তু এবার গত বছরের তুলনায় আংশিক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ইফতার সামগ্রী কিনতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে রমজানের প্রথম দিন থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে ইফতার সামগ্রীর দোকান ও প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দোকানে সতর্কতামূলক অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।অভিযানে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর দোকানগুলোর খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া ঠিক আছে কিনা, ভেজাল যুক্ত খাবার বিক্রি হচ্ছে কিনা, খাবার পরিবেশনের মান তদারকি করেন।