বাসস
  ১৭ মার্চ ২০২৫, ২০:২৯

চট্টগ্রামে শিশু অপহরণ মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন; স্ত্রীর ১৪ বছরের দণ্ড

চট্টগ্রাম, ১৭ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে চার বছরের শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির মামলায় মো. সাখাওয়াত হোসেন (২৯) নামে এক পোশাক শ্রমিককে পৃথক ধারায় দুবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। 

একই রায়ে তার স্ত্রী মোসাম্মৎ কমলা বেগমকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। 

এছাড়া সাখাওয়াতের মা-ভাইসহ তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন। 

রায়ে আদালত উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডিত মো. সাখাওয়াত হোসেন কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সাখাওয়াত হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম, তার ভাই জাকির হোসেন এবং কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার বিরলী গ্রামের মো. বশির আহম্মেদ।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি সাখাওয়াত হোসেন নগরের পতেঙ্গা থানার খেজুরতলা এলাকায় মো. সোহেলের ঘরে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতেন। ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় সোহেল তাকে ঘর ছেড়ে দিতে বলে। ২০১৮ সালের ১৩ জুন সন্ধ্যায় সাখাওয়াত জমিদার সোহেলের বাসায় গিয়ে চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে তার চার বছর বয়সী কন্যা সায়মা আক্তারকে নিয়ে যায়। এরপর মুঠোফোনে কল করে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন দুপুরে সোহেল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।

মামলা দায়েরের পর পুলিশ শিশুকন্যা সায়মা আক্তারকে উদ্ধার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশিদ এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। 

পরে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলায় মোট পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিনকে বলেন, ‘আসামি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। উভয় সাজা একত্রে চলবে বলে জানিয়েছে আদালত।

তিনি বলেন, ‘সাখাওয়াতের স্ত্রী আরেক আসামি মোসাম্মৎ কমলা বেগমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।