শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৩ মার্চ ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া উপকূলীয় এলাকায় ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৪ সালে আত্মসমর্পণ করা ১২৭ জন জলদস্যুদের মাঝে ঈদ উপহার দিয়েছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। এই ১২৭ জন এক সময় বঙ্গোপসাগরের পেশাদার জলদস্যু ছিলেন। র্যাবের কাছে বিভিন্ন সময় আত্মসমর্পন করে তারা এখন আলোর পথের অভিযাত্রী।
রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ হলরুমে র্যাবের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে এ ঈদ উপহার সামগ্রী আলোর পথের অভিযাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে আত্মসমর্পণ করা এসব আলোর পথের অভিযাত্রীদের সঙ্গে র্যাবের এক বিশেষ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান।
সভায় বাঁশখালীর জলদস্যু আব্দুল হাকিম বাইশ্যা বলেছেন, র্যাবের সহযোগিতায় সৎ পথে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি সুখে আছি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। যারা আমাকে আলোর পথ দেখিয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
জলদুস্য রানী খ্যাত রহিমা বেগম বলেন, অনেক মামলার আসামি হয়েছি, মামলাগুলো এখনো চলমান রয়েছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে।
বক্তব্যে র্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, আত্মসমর্পণের পর থেকে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সময়ে আত্মসমর্পণকারীদের ঈদের উপহার সামগ্রী ও প্রণোদনা প্রদান করা হয়। তারই ধারবাহিকতায় আজও ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৪ সালে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় অঞ্চল থেকে আত্মসমর্পণকৃত ১২৭ জন আলোর পথের অভিযাত্রীদের সুস্থ জীবন যাপনের জন্য উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, কোন অপরাধী যদি খারাপ পথ থেকে ফিরে আসতে চায়, তবে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দরজা খোলা আছে। যারা অপরাধ জগতে রয়েছে, তারা যদি হালাল পথে আসতে চায়, তবে তাদের সৎ পথে থাকতে হবে, তাদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। আমি আশা করি, বাঁশখালী, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকার অপরাধীরা আলোর পথে ফিরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আলোর পথে ফিরে এসেছে, তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। র্যাব ফোর্সেসের পক্ষ থেকে তাদেরকে তদারকি করা হয়। তাদের কাছে বার্তা দিতে চাই, যারা সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে তাদের পাশে সব সময় থাকবো। তাদের মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য তালিকা পাঠিয়েছি। যারা এখনও ফিরে আসেনি তাদেরকে আহ্বান জানাবো, যেন তারাও আলোর পথে ফিরে আসেন।’
এসময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর উপ-পরিচালক মেজর মোহাম্মদ সাদমান সাকিব, মিডিয়া অফিসার ও সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এ.আর.এম মোজাফফর হোসেন, বাঁশখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, বাশখাঁলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক মীর আকমল হোসেন, আত্মসমর্পণকারী আব্দুল হাকিম বাইশ্যা, আনোয়ার হোসেন, রহিমা বেগম ও আব্দুল গফুর প্রমুখ।