শিরোনাম
রংপুর, ২৪ মার্চ ২০২৫ (বাসস) : ঈদ বাজারে কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় ভোগান্তি নগরীর যানজট। বিশেষ করে নগরীর প্রাণকেন্দ্র জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে টাউন হলের সামনে যেতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশি সময় লাগছে। এর ফলে কেনাকাটা করতে আসা নারী-শিশুসহ সব বয়সী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা। ঈদ উপলক্ষে বাইরের জেলা ও উপজেলা থেকে শত শত অটোরিকশা প্রবেশ করায় নগরীতে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে।
যানজট কমাতে প্রতিবছরের মতো এবারও নতুন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা চালু করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। ট্রাফিক বিভাগ নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে রিকশা ও অটোরিকশাকে অন্য পথে ঘুরিয়ে চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছে। মূল সড়কে নতুন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ভোগান্তি কিছুটা কমবে বলে মনে করছেন ক্রেতাসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা।
মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর লক্ষ্মী সিনেমা হল মোড়, জীবন বীমা মোড়, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মোড় এবং সেন্ট্রাল রোডের কাস্টমস অফিস সংলগ্ন এলাকায় অটোরিকশার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে মূল নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে অটোরিকশার চলাচল সীমিত হওয়ায় যানজট কমবে। ঈদে কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনের দুর্ভোগও কিছুটা লাঘব হবে।
ঈদবাজারে ক্রেতাসাধারণের নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিশেষ করে সারা বছর নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে সিটি কর্পোরেশন পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। ঈদে এই যানজট কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। তাই নগরীর যানজট নিরসনে মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নগরবাসী।
ঈদের কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী মর্জিনা বেগম ও ব্যবসায়ী মীর আনোয়ার আলী বলেন, ঈদে কেনাকাটা করা খুব কষ্টকর। রোজা রেখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করার উপায় নেই। নগরীতে কোন পার্কিং এরিয়া নেই। তাছাড়া রিকশা সবখানে থামতে চায় না। যানজট একটু কমলে কেনাকাটায় সময় দেওয়া যাবে।
লালমনিরহাট থেকে কেনাকাটা করতে আসা মফিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ঈদের সময় রংপুরে কেনাকাটা করতে আসি। এবারেও এসেছি। কিন্তু এখানে তীব্র যানজটের কারণে কোথায় গাড়ি রাখবো আর কোথায় কেনাকাটা করবো, এই নিয়ে চিন্তায় আছি। তবে আজ থেকে ট্রাফিক ব্যবস্থায় নতুন নিয়ম চালু করায় কিছুটা স্বস্তি পাবো বলে আশা করি।
রিকশাচালক রহমত আলী বলেন, ‘আগে তো অটোরিকশার কারণে রিকশা নিয়ে নগরীতে ঢোকাই যেতো না। আজ থেকে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যাত্রী নিয়ে যাওয়া যাবে। এই নিয়ম ঈদ পর্যন্ত থাকলে ভালো হবে।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুর রশিদ বাসসকে বলেন, এমনিতেই রংপুর নগরীতে অটো রিকশা ও রিকশার চাপ বেশি। ঈদে এই চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই ঈদ উপলক্ষে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীসহ জনবল বাড়িয়ে নতুন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। আশা করি এতে যানজট কমবে এবং ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারবেন। এসময় নগরবাসীর কাছেও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।