বাসস
  ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৭:২৫
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৭:২৮

পছন্দের জিনিস কিনতে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা 

ছবি : বাসস

॥ আবদুর রাজ্জাক ॥

কুষ্টিয়া, ২৬ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে কেনাকাটা। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদে জমজমাট কুষ্টিয়ার বিপণি বিতান থেকে ফুটপাত। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটার ধুম। পছন্দের জিনিস কিনতে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানিরা। এদিকে ঈদের বাজার নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শহরের পৌর মার্কেট, পরিমল টাওয়ার, অভিজাত শপিংমল, আড়ং, ইজি ফ্যাশন, দর্জিবাড়ি, বন্ড ফ্যাশন হাউজগুলোতে ঈদের কেনাকাটা পুরোদমে জমে উঠেছে। পাশাপাশি শহরের মজমপুর থেকে এনএস রোড বড়বাজার পর্যন্ত সড়কের দুপাশের ফুটপাতেও নতুন পোশাকের দোকান। ক্রেতাদের ভিড় ফুটপাতেও। জুতা, স্যান্ডেল, গয়না সবই আছে দোকানগুলোতে।

সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর ছোট-বড় বিপণি বিতানগুলো। পছন্দের পোশাক কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা। ঈদের নতুন পোশাক আর সাজসজ্জার খুশিতে সবার চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক। 

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবার আগেভাগেই ঈদের বাজার জমে উঠেছে। প্রথম রমজান থেকে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দম ফেলার সময় নেই। দিন যত যাচ্ছে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। এ বছর ব্যবসায় ভালো লাভ হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। 
পরিমল টাওয়ারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বাসসকে বলেন, ‘এবার বিভিন্ন পোশাকের দাম ক্রেতা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। আশা করি তারা ঠকবেন না। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাসমাগম হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এভাবে থাকলে আশা করা যায় ভালো লাভবান হতে পারবো।’

পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী সাত্তার আলী বাসসকে বলেন, ‘এবার জামদানি শাড়ি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, নতুন ফারসি, বুটিকসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির চাহিদা তুঙ্গে। তরুণীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান থ্রিপিস, বুটিক থ্রিপিস। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানি থ্রিপিস। এ বছর ভালো লাভ হবে বলে আশা করছি।’

ফুটপাতের ভাসমান বিক্রেতা আজিজ আলী বাসসকে বলেন, ‘মার্কেটের জিনিস আর আমাদের জিনিসের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। বরং আমাদের দোকান ভাড়া লাগে না। তাই দাম অনেক কম। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে আমাদের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে।’

ঈদের কেনাকাটা করতে আসা শহরতলীর চৌড়হাস ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘এ বছর মার্কেটে পা ফেলার জায়গা নেই। দোকানদাররা বেশি দাম চাচ্ছেন। ঘণ্টাখানেক ঘুরলাম। অতিরিক্ত দামের কারণে এখনো কোনো পোশাকই কিনতে পারিনি। দাম বেশি হলেও পছন্দের পোশাক কিনেই বাড়ি ফিরবো।’

ক্রেতা সাদিয়া খাতুন বলেন, ‘পাকিস্তানি ব্র্যান্ডের একটি থ্রিপিস কিনেছি। অন্যসব পোশাক কিনতে যাচ্ছি। পছন্দ হলেই তা কেনা হবে। গতবারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হলে ফুটপাতের দোকান ছাড়া বিকল্প নেই।’

এদিকে ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছে জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বাসসকে বলেন, ঈদের বাজার নির্বিঘ্ন করতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। যে-সব এলাকা বেশি স্পর্শকাতর সেসব এলাকা বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কেউ কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।