শিরোনাম
চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত
চট্টগ্রাম, ৩১ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে উৎসবমুখর পরিবেশে মুসল্লিরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৮টায় চট্টগ্রামে প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে। পরে সাড়ে ৮টায় ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
প্রথম নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ জমিয়তুল ফালাহ এর খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। নামাজ শেষে খুতবায় আলাউদ্দীন আল কাদেরী দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন একই মসজিদের পেশ ইমাম আহমেদুল হক।
জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের ময়দানে প্রথম ঈদ জামাতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান, নগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠ, নগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান হেলালী, সদস্য ফখরে জাহান সিরাজী, খুলশী থানার আমীর মুহাম্মদ আলমগীর ভুইঁয়াসহ আরও অনেকে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।
ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৬টি বছরের আনন্দ থেকে এবারের ঈদের আনন্দ ভিন্ন। কারণ গত ঈদগুলোতে একটা দল সমাজের একটা বিশাল অংশকে বিভিন্ন হামলা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে ঈদ পর্যন্ত করতে দেয়নি। তাদের পরিবারে ঈদের কোনো আনন্দ ছিল না। তারা এবার নির্বিঘ্নে এবং নিশ্চিন্তে সবাই মিলে ঈদ উদযাপন করছে।
এদিকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নগরীর উত্তর কাট্টলীতে নিজ বাড়ির মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
নগর জামায়াতের নেতাদের মধ্যে চকবাজার প্যারেড মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন নায়েবে আমীর আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন নগর জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ নুরুল আমিন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, সদস্য জাকের হোসাইন।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে সকাল ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে লালদীঘি শাহী জামে মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ (র.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি কর্পোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুর বাজার জামে মসজিদ ও মা আয়েশা সিদ্দিকা চসিক জামে মসজিদে।
এদিকে ঈদের দিন ভোর থেকেই চট্টগ্রাম উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সব ভেদাভেদ ভুলে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শিশুদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে নগরের অলিগলি।
এদিকে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে নিরাপত্তায় সিএমপি’র পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। নগরে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত অপরাধ প্রতিরোধেও বিশেষ টহল ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হয়েছে। অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধী চক্রকে প্রতিহত করতে বাড়ানো হয়েছে বিশেষ নজরদারি।
নামাজ আদায় শেষে চসিক মেয়র ১৯৭১, ১৯৯০ এবং ২০২৪ এর সৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ ও আহতদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, দেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য মানুষ বারবার বুকের রক্ত দিয়েছে এবং অজস্র মানুষ শহীদ হয়েছে। জনমানুষের প্রত্যাশিত বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হোক।