শিরোনাম
খাগড়াছড়ি, ১ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের মানুষ টানা ১১ দিনের ছুটি উপভোগ করছে। এই ছুটিকে কাজে লাগাতে ভ্রমণপিপাসুরা বেরিয়ে পড়েছেন ভ্রমণে। গতকাল ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আজ ঈদের দ্বিতীয় দিনে খাগড়াছড়িতেও রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক এসেছে। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে পাহাড়ি কন্যা খাগড়াছড়িতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজারো সৌন্দর্য্য পিপাসু পর্যটক।
ঈদের দিন থেকেই খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। তবে কেন্দ্রগুলোতে বাইরের পর্যটকের চেয়ে স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেশি। সাপ্তাহিক ছুটিসহ ঈদের ছুটি শেষ হতে এখনও চারদিন বাকি। সামনের ছুটির দিনগুলোতে জেলার বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম দৃশ্য। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতির তৈরী নজরকাড়া হাজারো চিত্র। শুভ্র মেঘের চাদরের নীচে রয়েছে সবুজ বনরাজিতে ঘেরা ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। তার মাঝ দিয়ে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা সড়ক। খাগড়াছড়ির রিছাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝরণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত সেতু, মায়াবিনী লেক, দেবতা পুকুর, জেলার সীমান্ত শহর রামগড়ে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস বর্তমান বিজিবি’র ‘ জম্ম স্থান’, কৃত্রিম লেক ও রামগড় ঝুলন্ত সেতুসহ প্রতিটি পর্যটন স্পটে এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।
ছুটিতে খাগড়াছড়ির এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছেন। ফলে অতিরিক্ত পর্যটকের ভারে পরিবহণ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে বহু হোটেল- রেষ্টুরেন্ট।
ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, তারা পাহাড়ের অপরূপ সৈন্দর্য্য উপভোগ করতে পরিবার পরিজন নিয়ে এই ঈদে ঘুরছেন খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোতে।
খাগড়াছড়ির হর্টিকালচার পার্কের ব্যবসায়ী টিটু চাকমা জানান, দীর্ঘ একমাস রোজাতে পর্যটক না আসায় তাদের ব্যবসা হয়নি। ঈদের দিনে পচুর পর্যটক আসায় তাদের বেচা বিক্রি বেড়েছে। আগামীতে আরো বাড়তে পারে বলে আশা করছেন।
খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থৈই অংগ্য মারমা জানান, ঈদের দিনে এই পার্কে প্রায় ৫ হাজার পর্যটক এসেছেন। আগামীতে আরও আসবেন বলে মনে করছেন।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কোকোনাথ ত্রিপুরা জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিনে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে ৪ হাজার টিকেট বিক্রি হয়েছে।
এদিকে খাগড়াছড়ি টুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিশাত রায় জানান, পর্যটকেরা যাতে নিরাপদে ঘুরতে পারেন সে ব্যবস্থা নিয়েছে টুরিস্ট ও জেলা পুলিশ।
উল্লেখ্য ঢাকা হতে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ৩১৬ কি.মি. ও চট্টগ্রাম হতে ১০৯ কি.মি.। রাজধানী শহর ঢাকার কমলাপুর, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, কলাবাগান থেকে সরাসরি নানা বিলাস বহুল পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি আসা যায়। তবে আসার আগে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আসতে হবে। অন্যথায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।