শিরোনাম
ঝিনাইদহ, ৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : বর্ণাঢ্য র্যালি, বেলুন উড়িয়ে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ঝিনাইদহের ঐহিত্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠের ১২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ আয়োজন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মিলনমেলায় পরিণত হয়।
গতকাল সকাল ৯টায় ঝিনাইদহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এসব আয়োজন করা হয়। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ব্যাচের কয়েক হাজার প্রাক্তণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের পায়রা চত্বর ও সরকারি কেশবচন্দ্র কলেজ সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে মিলিত হয়।
র্যালিতে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এমএ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা নেতৃত্ব দেন। এসময় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন, কামরুজ্জামান লিটনসহ প্রতিষ্ঠানটির হাজার-হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশ নেন। বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে ও রঙ-বেরঙের বেলুন হাতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা নেচে গেয়ে এ র্যালি করেন। এসময় শহর জুড়ে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
র্যালি শেষে বিদ্যালয়ের মাঠে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনাসহ অন্যান্যরা বক্তৃতা করেন।
স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় মনোজ্ঞ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তণ শিক্ষার্থী সাদেক আলী বলেন, বহুদিন পর এরকম একটা আয়োজনের ফলে আমরা একত্রিত হতে পেরেছি। বয়স হয়ে গেছে। তবুও আজ শৈশবের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে, শৈশবে ফিরে এসেছি।
প্রতি বছর পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের দাবি রেখে প্রবীণ প্রাক্তণ শিক্ষার্থী সামাদ আলী বলেন, ৪৫ বছর আগে স্কুল থেকে বিদায় নিয়েছি। এখনও স্কুলের সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। এই অনুষ্ঠানে এসে অনেক ভালো লাগছে। তবে অনেক বন্ধু পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের কথা মনে পড়ছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজকদের অন্যতম আমিনুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘বিগত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাসিবাদী অপশক্তির দৌরাত্ম্য ছিল। যে কারণে এধরণের অনুষ্ঠানে মানুষের প্রাণোবন্ত উপস্থিতি ছিল না। এবার আমরা চেষ্টা করেছি, যেন এই আয়োজনে সবাই প্রাণখুলে অংশ নিতে পারে। আমরা চেষ্টা করবো, যেন প্রতিবছর এই আয়োজন আমরা করতে পারি।’
প্রসঙ্গত, ১৯০৩ সালে তৎকালীন ঝিনাইদহ শহরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওয়াজির আলী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এখান থেকে পড়াশোনা করে দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন অনেকেই। এই অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবদান অবিস্মরণীয়।