শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের কোথাও যানজট নেই। ছবি: বাসস

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ঈদের পর আজও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের কোথাও যানজট নেই। মানুষ নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন। ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতেই গন্তব্যে ফিরছেন মানুষ।

হাইওয়ে পুলিশের তথ্য মতে দেশের ব্যস্ততম এ মহাসড়কের কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক। এ সময়টাতে আর যানজটের আশঙ্কাও করছেন না তারা।

বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোলপ্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এ অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোর অংশে যানজট প্রবণ ১২টি হটস্পট রয়েছে। চিহ্নিত সেসব স্থানে পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

এ মহাসড়কের হটস্পটগুলোর মধ্যে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতি মেঘনা সেতুর টুল পয়েন্ট, শহীদ নগর, চান্দিনা উপজেলার  মাদাইয়া বাজার, চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড। 
বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার, আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর। সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সোয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার। এছাড়া হটস্পট হিসেবে রয়েছে কুমিল্লা সিলেট হাইওয়ের কংশনগর বাজার রয়েছে। ঈদের আগে এ মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা সমূহ উচ্ছেদ করা হয়। ফলে ঈদের আগে ও পরে যানজট বা কোন রকম ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ চলাচল করছে। এছাড়া পুলিশ সে¦চ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে মহাসড়কে সার্বিক বিষয়ে তদারকি ও দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার থেকে খুলবে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস। ফলে কর্মস্থলমুখি মানুষের কারনে মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ।

নগরীর চকবাজার এলাকার বাসিন্দা শামছ তাবরীজ বলেন, জ্যামের কথা মাথায় রেখে হাতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু কোথায় জ্যাম না থাকায় দেড় ঘন্টার ঢাকায় চলে আসি।

ঈদের ছুটি থেকে কুমিল্লা থেকে ঢাকা যাওয়া এক যাত্রী কাশেদুল হক চৌধুরী জানান, কুমিল্লা থেকে রওনা হয়ে দু'ঘণ্টায় ঢাকায় এসে পৌছেছি। এবার ঈদের আসা যাওয়ার পথে স্বস্তিতে চলাফেলা করেছি।

এশিয়া পরিবহনের কর্মী মুজিব মিয়া বলেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলো কোনটির সিট ফাঁকা নেই। যাত্রীর অনেক চাপ আছে। আমরা অতিরিক্ত কোন ভাড়া রাখছি না।

কুমিল্লা বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আলম বলেন, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিআরটি, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।  সড়ক দুর্ঘটনা রোধে অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ, তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ, ফিটনেস বিহীন গাড়িসহ মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিদিনই মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে বিভিন্ন পরবিহণকে। ঈদের ছুটি পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ খায়রুল আলম বলেন, ঈদের আগে ও পরে মহাসড়ক নিরাপদ ও যানচলাচল নিবিঘ্ন রাখতে আমি আমার বাহিনী নিয়ে সার্বক্ষণিক মহাসড়কে কাজ করেছি। আমাদের সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহযোগিতা করেছে, ফলে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে মানুষ এবার সবচেয়ে স্বস্তিতে ঈদের আগে ও পরে চলাচল করেছে। ঈদের ছুটি শেষে মানুষ স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফিরছে। মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে, কোন যানজট নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক। এ সময়টাতে আর যানজটের আশঙ্কাও নেই।