বাসস
  ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:১৪

বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য খরা তহবিল গঠন ও ‘জাতীয় খরা নীতিমালা’ তৈরির দাবি

বৃহস্পতিবার রাজশাহী সাহের বাজার জিরো পয়েন্টে খরা তহবিলের দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করে ‘বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ’ ও ‘বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’। ছবি: বাসস

রাজশাহী, ১০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): বরেন্দ্র অঞ্চলের জলবায়ু সংকট হিসেবে খরা তহবিল ও খরা নীতিমালা তৈরিতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ’ (বারসিক) ও বরেন্দ্র অঞ্চলের বৃহৎ তরুণ-যুব ঐক্য ‘বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’।

এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানানো হয়েছে, বৈশ্বিক জলবায়ু সংংকটের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজশাহী সাহের বাজার জিরো পয়েন্টে  খরা তহবিলের দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করে সংগঠন দুটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল। ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক এর সঞ্চালনা করেন।

বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলে নানামুখি সংকট দেখা দিয়েছে। তীব্র তাবদাহ, খরা এবং পানি সংকটের কারণে ভবিষ্যতে এই এলাকায় সামজিক সহিংসতাসহ প্রাণ বৈচিত্র্য এবং মানুষের জীবন-জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তার সংকট ভয়াবহ হবার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের তরুণ-যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বরেন্দ্র অঞ্চলটিও দিনে দিনে খরার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিণত হচ্ছে। কিন্ত এই সমস্যা মোকাবেলায় বৈশ্বিক দরবারে তেমন কোন উদ্যোগ যেমন নেয়া হয়নি, তেমনি জাতীয় পর্যায়ে খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য সরকারি বেসরকারিভাবে খরা মোকাবেলায় স্থানীয় মানুষের জন্য সমন্বিত কোন উদ্যোগ এখনো গ্রহণ করা হয়নি।

জলবায়ু ধর্মঘটের মূল দাবি এবং বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা মোকাবেলায় ‘খরা ঘোষণাপত্র’ তুলে ধরে বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল বলেন- খরা যেন হত্যা করছে কৃষক আদিবাসীসহ প্রান্তিক মানুষকে। অবিলম্বে এটির সমাধান করতে চাই খরা তহবিল ও ‘জাতীয় খরা নীতিমালা’ প্রণয়ন।

বক্তব্যে দেয়ার সময় তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। এরমধ্যে আছে, জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনীদেশগুলোর নিকট থেকে জলবাযুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে খরা তহবিল আদায় ও পদক্ষেপ নেয়া। অঞ্চলভেদে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা, জাতীয় পর্যায়ে বরেন্দ্র অঞ্চলের জনগোষ্ঠী এবং পরিবেশ প্রতিবেশকে বিবেচনায় নিয়ে ‘খরা নীতিমালা’ তৈরি ও খরা পীড়িতদের জন্য ‘খরা ভাতা’ চালুকরণ এবং বৈষম্যমূলক পানি নীতিমালাগুলো (জলমহাল লিজপ্রথা নীতিমালা, বিএমডিএ সেচ নীতিমালা ইত্যাদি) পরিবর্তন করে জনবান্ধব ও বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন।

ধর্মঘট কর্মসূচিতে আলোচনায় আরো অংশ নেন- পরিবেশ আইন গবেষক ও বারসিক রাজশাহীর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম, জুলাই ৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, সামাজিক কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হান, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি উপেন রবিদাস, সেভ দ্য নেচার এন্ড লাইফ যুব ইউনিটের আহ্বায়ক জুলফিকার আলী হায়দারসহ আরো অনেকে।