শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ ( বাসস) : আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলছে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হয়।
এর আগে বেলা ১২ টায় বিএনপির প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে।
বৈঠকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান অংশ নিয়েছেন।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বার্তা সংস্থা বাসস’কে বলেন, ‘এবার দলের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়বস্তু খানিকটা ভিন্ন। আমরা মূলত নির্বাচন নিয়ে সরাসরি কথা বলতেই যাচ্ছি। কারণ, গতবার আমরা যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম, তখন তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন, ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরাও তার কথায় আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কারণ প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১৮ মাস সময় যথেষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তখন প্রধান উপদেষ্টাকে বলে এসেছিলাম, নির্বাচন সংক্রান্ত আপনার দেয়া এই রোডম্যাপের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে জাতির সামনে তুলে ধরবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এমন কোনও উদ্যোগ আমরা দেখতে পাইনি। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয় যে জনগণ নাকি তাদের পাঁচ বছরের জন্য চায়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবও বলেছেন- ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। ফলে নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।’
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এই নেতা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সরকারের মনোভাব আমরা সুনির্দিষ্টভাবে জানা ও বোঝার চেষ্টা করবো। সে অনুযায়ী তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টা) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য আমরা আহ্বান জানাবো।’
সাক্ষাতে নির্বাচন ছাড়াও আর কী কী বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ছোট সংস্কার বা বড় সংস্কার বলতে কি বোঝাতে চেয়েছেন, সেটাও আমরা জানতে চাইব। সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে। বিএনপিও সংস্কারের কথা বলছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠকও হচ্ছে। সংস্কার প্রক্রিয়া চালু থাকা অবস্থায় নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া যাবে না, বিষয়টা এমন তো হতে পারে না ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের ভেতরে এখনও স্বৈরাচারের দোসররা শক্তভাবে বসে আছে। যারা দেশ বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত, সুযোগ পেলেই দেশের ভেতরে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, আমরা বারবার তাদের অপসারণের ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এ বিষয়েও সরকারের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তাছাড়া এখনো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অসংখ্য মামলা ঝুলছে। এ বিষয়েও কোনো সুরহা এখন পর্যন্ত হয়নি।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ ১১৯ কর্মকর্তাকে সচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। এমনটা তো হওয়ার কথা না। বিষয়গুলো জাতির কাছে ভুল বার্তা দেয়। আমরা মূলত এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি কথা বলব।’
অন্যদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।