শিরোনাম
বরগুনা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : বরগুনা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি এই তিন জেলা মিলিত হয়েছে একটি প্রান্তে এসে। তিনটি ধারায় প্রবহমান স্থানীয় হলতা নদীর তিন পাশে তিন জেলার ভৌগলিক সীমানা। তিন জেলার মিলনস্থানটি হতে পারে আকর্ষণীয়
পর্যটন স্পট।
এ স্থানটিতে এসে মাত্র ৫ মিনিটে তিন জেলায় পা রাখা যায়। বরগুনার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রাম, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের দেবত্র গ্রাম এবং ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার পাতাকাটা ইউনিয়নের জোরখালি গ্রামের মিলন কেন্দ্র হলতা নদীর বুকে। আবার তিন জেলাকে বিভক্ত করে কুলকুল বয়ে চলেছে হলতা নামের ছোট্ট সুন্দর নদীটি। এ স্থানটি হতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দর একটি পর্যটন স্পট।
পিরোজপুরের দাউদখালী ইউনিয়ন। এখান থেকে হলতা নদীর পার ধরে ২ মিনিট হেঁটে গেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় ঝালকাঠির জোরখালি গ্রামে। হলতা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে রাজারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজারহাট শহীদ বাচ্চু মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এছাড়া বিদ্যালয় দু’টি হলতা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় স্কুলের সীমানা যেখানে শেষ হয়েছে সেখানেই শুরু হয়েছে বরগুনার বামনা উপজেলা ও ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার সীমানা। এসব বিদ্যালয়ে তিন জেলার শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। তাদের বন্ধুত্ব, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষার পাশাপাশি গড়ে উঠছে সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন।
রাজারহাট বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীারা জানায়, এই স্কুলে পড়তে আমাদের অনেক ভালো লাগে, আমাদের স্কুলটি তিন জেলা কেন্দ্র হওয়ায় এখানে সহপাঠীরা তিন জেলার।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের এই জায়গাটি এমন একটি জায়গা যেখানে তিনটি জেলা মিলেছে। এখানে আমরা সবাই এমন ভাবে বাস করি যেন সবাই এক জেলারই মানুষ। কাগজপত্রে শুধু আমরা আলাদা। এই জায়গাটা এত সুন্দর যে কেউ আসলে মুগ্ধ হয়ে যাবে। এখানে ৫ মিনিট পায়ে হেঁটে তিনটি জেলায় ঘুরে আসা যায়। তিন জেলার কেন্দ্রের কথা শুনে অনেকেই এখন আমাদের এই এলাকায় ঘুরতে আসেন।
তারা আরও জানান, হলতা নদী আমাদের তিনটি জেলাকে বিভক্ত করেছে। আমরা তিনটা আলাদা জেলার অধিবাসী হলেও আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন চমৎকার। এই তিন এলাকার সবাই এখানের ঐতিহ্যবাহী রাজারহাট বাজারে আসে, আড্ডা দেয়, বাজার করে। এছাড়া আমরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে একে অপরের এলাকায় গেলেও আমাদের মনে হয় না যে আমরা অন্য একটি জেলায় এসেছি। আমরা সবাই মিলেমিশে চলি। আমাদের এই তিনটি জেলার বন্ধন অটুট রাখতে সরকার যেন এখানে সুদৃষ্টি দেয়। পাশাপাশি এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সহ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার আবেদন জানাই।
বরগুনা জেলা পর্যটন উদ্যোক্তা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সোহেল হাফিজ জানিয়েছেন, এলাকাটি পর্যটনের জন্য সম্ভাবনাময়। এছাড়া বরগুনার বুকআপনিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় সাব সেক্টর এর প্রধান হেড অফিস ছিল সেই এলাকায় এই হলতা নদী। এখানে দাঁড়িয়ে তিনটি জেলা দেখা যায়। এখানে যদি দৃষ্টিনন্দন কোন স্থাপনা তিন মাথার সেতু তৈরি করে দেয়া যায় তবে এটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হবে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে আমরা এখানে পর্যটন উদ্যোক্তা কমিটির পক্ষ থেকে ক্যাফে বা ছোট দর্শনীয় স্থানের মত কিছু একটা করতে পারি যা স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।