শিরোনাম
কিশোরগঞ্জ, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে পিতা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৫ বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বোরণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের ঢাকী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন অভিযুক্ত তানিয়া আক্তারের চাচা মো. শরিফুল ইসলাম।
তানিয়া আক্তার বর্তমানে মিঠামইন উপজেলার বোরণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, তানিয়া আক্তার ২০১০ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি ১৫ বছর ধরে সরকারি বিধি মোতাবেক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুক তার আপন ছোট ভাই জিতু মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তারকে নিজের মেয়ে সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করার সুযোগ করে দেন। সহকারী শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের বাবা জিতু মিয়া এখনও জীবিত আছেন।
ঢাকী ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ওয়ারিশান সনদ অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুকের শারমিন স্মৃতি, রোজিনা বেগম ও রুনি আক্তার নামে তিন মেয়ে আছে । এছাড়াও সহকারী শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের এনআইডি কার্ডে দেখা যায় পিতা গোলাম ফারুক লেখা থাকলেও মায়ের নাম হেলেনা বেগম। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুকের মেয়ে রোজিনা বেগম ও রুনি আক্তারের এনআইডি কার্ডে দেখা যায় পিতা গোলাম ফারুক লেখা থাকলেও মায়ের নাম লেখা লজ্জত বেগম। তার মানে মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুকের স্ত্রীর নাম লজ্জত বেগম আর গোলাম ফারুকের ছোট ভাই জিতু মিয়ার স্ত্রীর নাম হেলেনা বেগম। এসব অভিযোগেই কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তানিয়া আক্তারের চাচা ও গোলাম ফারুকের আরেক ভাই মো. শরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ফারুকের বাড়িতে গেলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, সাংবাদিক আসার খবরে দরজা বন্ধ করে চলে গেছে তার পরিবারের লোকজন।
মুঠোফোনে গোলাম ফারুকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি এলাকায় নাই, অনেক দূরের হাওরে চলে গেছেন। তারপর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাকে বাড়ির সামনে ধান ক্ষেতে দেখা যায়। সেখানে তার সাক্ষাৎকার নিতে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি তানিয়া আক্তারকে নিজের সন্তান হিসেবে জোর দাবি করেন। একজন মেয়ের দুইজন জীবিত পিতা কীভাবে থাকতে পারে, এইসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
অভিযুক্ত তানিয়া আক্তারে কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু মানুষ শত্রুতা করে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। এইসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
মিঠামইন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. সাদিকুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের বিষয়টি তদন্ত করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।