শিরোনাম
টাঙ্গাইল , ২২ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : জেলার মানুষ পাঁচ বছর ধরে মুষ্টি চাল তুলে তা বিক্রির টাকায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ করছে। জেলার মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার দুটি গ্রাম গবড়াও ডুবাইলএ দুই গ্রামের মধ্যে এক কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তা নির্মাণ না করায় অবশেষে পাঁচ বছর ধরে মুষ্টির চাল উঠিয়ে তা বিক্রি করে সে টাকায় রাস্তা নির্মাণ করেছে দুই গ্রামে বাসিন্দারা।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার শেষ প্রান্তে দুইটি গ্রাম গবড়া ও ডুবাইল। স্বাধীনতার পর এ দুই গ্রামে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি । নিচু এলাকা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানি আসার সাথে সাথে পানিতে তলিয়ে যায় এ দুই গ্রামের যাতায়াতের রাস্তাটি। যার কারণে বছরের ৪-৫ মাস রাস্তাটি জলাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। এ কারণে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত এবং অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে আনা নেওয়ায় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রামবাসীর । অবশেষে রাস্তায় কোন সরকারি অনুদান না আসার কারণে এলাকাবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ করছে। বিগত পাঁচ বছর ধরে সাপ্তাহিক মুষ্টির চাল তুলে তা বিক্রি করে দুই মাস যাবত এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। রাস্তাটির সম্পূর্ণ কাজ করতে প্রশাসন ও সরকারের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই গ্রামের লোকজন মাটি কাঁটার কাজ করছে। সকল বয়সী মানুষ রাস্তায় মাটি ফেলছেন। কেউ কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুষ্টির চাল তুলছেন। রাস্তার উন্নয়নের জন্য দুই গ্রামের মানুষ মিলে বিগত ৫ বছর ধরে মুষ্টির চাল তুলছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের সুজাত আলী বলেন,আমাদের গ্রাম দেলদুয়ারের শেষ প্রান্তে হওয়ায় এ এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উল্লেখ যোগ্য উন্নয়ন কোন হয়নি । স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমরা ঘুরাফেরা করছি, তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই আমরা নিজ উদ্যোগে সবাই মুষ্টির চাল ও নিজেরা টাকা সংগ্রহ করে এক কিলোমিটার রাস্তায় মাটি ফেলেছি। আমরা যদি সরকারি সহযোগিতা পাই আমাদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবো। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
মির্জাপুর উপজেলার গবড়া গ্রামের আতিক মিয়া বলেন, গবড়া ও ডুবাইল গ্রাম মাঝামাঝি হওয়াতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া পাচ্ছি না।আমরা কারও কাছে সহযোগিতা না পেয়ে যুব সমাজ ও মুরুব্বিরা মিলে নিজেদের রাস্তা নির্মাণ কিছুটা করতে পারছি। নিজেরাই মাটি কেটে রাস্তায় ফেলছি। মুষ্টির ফান্ডের টাকা ও গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় রাস্তা কিছুটা সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। কাজ করতে গিয়ে যে টাকা ছিল তা ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। টাকা শেষ হওয়ার কারণে বাকি কাজ সম্পূর্ণ করতে পারছি না। মির্জাপুর-দেলদুয়ার প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
দেলদুয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রওশন করিম বলেন, চাল তুলে তা বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ করছে এ বিষয়টি আমার জানা নাই। রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে আমার কাছে কেউ এখনো আসে নাই। তবে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।