বাসস
  ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৯

চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর বসছে ২৫ এপ্রিল

(কুস্তি প্রতিযোগীতা) চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর বসছে ২৫ এপ্রিল। ছবি : বাসা

চট্টগ্রাম, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার (কুস্তি প্রতিযোগীতা) ১১৬তম আসর বসছে আগামী ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার নগরীর লালদীঘি মাঠে। 

পাশাপাশি লালদীঘি মাঠ ও আশপাশে বসবে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। যা চলবে ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এবারের বলীখেলায় শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। বলীখেলার এবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক গ্রামীণফোন।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর লালদীঘির পাড়ে সিটি করপোরেশন লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বলীখেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব শওকত আনোয়ার বাদল।

বলীখেলার উদ্বোধন করবেন- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নগরীর আন্দরকিল্লা থেকে কোর্ট বিল্ডিং পর্যন্ত প্রধান সড়কে মেলার স্টল না বসানোর পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজি রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

চট্টগ্রামের সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে এবারও তিনদিনের বৈশাখী মেলায় নানা আয়োজন থাকবে জানিয়ে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বাদল বলেন, ১৯০১ সালের ১২ বৈশাখ আমার দাদা, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক মরহুম আব্দুল জব্বার সওদাগর এই বলীখেলার সূচনা করেন। যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করার পাশাপাশি জাতীয় চেতনা জাগাতে বলীখেলা ছিল একটি কৌশলী উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, এবছর বলীখেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১০০জন বলী (প্রতিযোগী) ইতোমধ্যে যোগাযোগ করেছেন। তারা ২৪ তারিখ মাঠে উপস্থিত হবেন। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক বলীর জন্য সম্মানীও থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, লালদীঘি মাঠে বলীখেলার জন্য মূল রিং স্থাপন করা হবে। নগরীর কোতোয়ালি মোড়, আন্দরকিল্লা, সিনেমা প্যালেস ও বদরপাতি এলাকা ঘিরে বসবে বৈশাখী মেলার শতাধিক স্টল। শিশুর পুতুল- খেলনা থেকে শুরু করে খাবার, হস্তশিল্প, পোশাক, কসমেটিকসহ নানান সামগ্রী পাওয়া যাবে এই মেলায়।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের বলীখেলা সুষ্টু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বলীখেলার প্রধান বিচারক হাফিজুর রহমানকে আহবায়ক এবং মরহুম আবদুল জব্বারের নাতী শওকত আনোয়ার বাদলকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

তারা বলেন- ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সংগঠক মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরকে নিয়ে গবেষণা করা, ঐতিহাসিক লালদীঘি চত্বরকে মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের নামে নামকরণ করা, চট্টগ্রামে বলীখেলা চর্চার জন্য একটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা, মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরকে রাষ্ট্রিয়ভাবে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান, এই বলীখলাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়ে যেতে কিংবা ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী কিছুদিনের মধ্যে একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

গ্রামীণফোনের রিজিওনাল হেড মো. মোরশেদ আহমেদ বলেন, আবদুল জব্বারের বলীখেলার মতো জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। অতীতেও এই আয়োজনে পাশে ছিলাম। আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে এবারও এই আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- বলীখেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান বিচারক হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, গ্রামীণফোনের বিজনেস সার্কেলের মার্কেট কমিউনিকেশন প্রধান মো. আব্দুল্লাহ আল নুর ও সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল বালী প্রমুখ।